প্রিমিয়ার ভার্সিটিতে এভারেস্ট জয়ের গল্প শোনালেন বাবর আলী

| মঙ্গলবার , ৪ জুন, ২০২৪ at ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ

সম্প্রতি চট্টগ্রামের সন্তান বাবর আলী পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট এবং পৃথিবীর চতুর্থ উচ্চতর শৃঙ্গ লোৎসে পর্বত জয় করে ফিরেছেন। বাবর আলী দেশের হয়ে ষষ্ঠবারের মতো মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি হিসেবে তিনি লোৎসে (৮৫১৬ মিটার) জয় করেছেন।

গতকাল সোমবার প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির দামপাড়াস্থ কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে ‘বাবর আলীর এভারেস্ট জয়ের গল্প’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপউপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. তৌফিক সাঈদ। সভাপতিত্ব করেন তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান টুটন চন্দ্র মল্লিক। বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন মুন্নার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ডা. বাবর আলী তাঁর মাউন্ট এভারেস্ট ও লোৎসে জয়ের গল্প শোনান। তিনি ২০১৪ সালে প্রথম হিমালয়ে যান উল্লেখ করে বলেন, এভারেস্টের উচ্চতা বেশি, কিন্তু লোৎসে আরোহণ তুলনামূলক কঠিন। এই দুই পর্বতের শিখর থেকে দেখা নিচের পৃথিবীর দৃশ্য এ জীবনে বিস্মৃত হওয়া সম্ভব নয়। আমি এভারেস্ট শীর্ষে এক ঘণ্টা ১০ মিনিট অবস্থান করি। এটা ছিল অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। চূড়া থেকে নেমে আসার সময় এক আহত পর্বতারোহীর জন্য মানবজটের সৃষ্টি হয়। এ কারণে সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় আমাকে। সেখানে অর্থাৎ সেই উন্মুক্ত এলাকায় শুরু হয় তুষারঝড়ও। তবে বড় কোনো দুর্ঘটনার মুখোমুখি আমাকে হতে হয়নি।

বাবর বলেন, ক্যাম্প৪ এবং এর ওপরের এলাকায় পর্বতারোহীরা ব্যবহার করেছেন অঙিজেন সিলিন্ডার। আমি চেষ্টা করেছি অভিযানে যতটা সম্ভব কম কৃত্রিম অঙিজেন গ্রহণ করতে। এভারেস্ট ও লোৎসে পর্বতে আমার সাথি ছিলেন নেপালের গাইড বাইরে তামাং। বাবর জানান, এভারেস্টে অনেক মরদেহ দেখলেও আমি মনোবল হারাইনি। এর মধ্যে অনেক ইকুইপমেন্ট নতুন, তারা মারা গেছেন বেশিদিন হয়নি। এভারেস্ট সামিট করার ক্ষেত্রে আবহাওয়া বড় ফ্যাক্টর। বাংলাদেশের একজন আবহাওয়াবিদ আমাকে দারুণ সহযোগিতা করেছেন। তিনি ‘শিখর থেকে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে আমি নেমে আসি’ উল্লেখ করে বলেন, বেসক্যাম্প থেকে কাঠমান্ডু ফিরে আসি মাত্র তিন দিনে। বাবর তার এই সফলতার পেছনে প্রধান কৃতিত্ব তার দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের বলে জানান। বাবর আলী পর্বতারোহণকে সকল খেলার রাজা উল্লেখ করে তার এভারেস্ট ও লোৎসে পর্বতারোহণের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেন। প্রধান অতিথি বলেন, অনেক নোবেল বিজয়ীর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। কিন্তু এই প্রথম কোনো এভারেস্ট বিজয়ীর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হলো। আমি গর্ব অনুভব করছি। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে আমি তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এভারেস্ট জয়ের ইতিহাসে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে চট্টগ্রামের নামও খোদিত করলেন। প্রধান অতিথি ম্যালোরি, স্যার এডমন্ড হিলারী ও তেনজিং নোরগে প্রমুখ এভারেস্ট বিজয়ীর কথা তুলে ধরেন। তিনি প্রকৃতি রক্ষার জন্য জলবায়ু সচেতনতার কথা বর্ণনা করেন।বিশেষ অতিথি ড. তৌফিক সাঈদ বলেন, অজানাকে জানার আগ্রহ মানুষের চিরকালের। এই আগ্রহকে সবাই বাস্তবে রূপদান করতে পারেন না। চট্টগ্রামের সন্তান ডা. বাবর আলী। তিনি অনেক বাধা অতিক্রম করে এভারেস্ট ও লোৎসে জয় করেছেন। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বাবরের এই দুঃসাহসিক অভিযান থেকে বড় কিছু করার শিক্ষা নিতে পারে। তাকে রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করতে পারে।

সভাপতির বক্তব্যে তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান টুটন চন্দ্র মল্লিক বাবর আলীকে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে এসে তাঁর এভারেস্ট ও লোৎসে জয়ের গল্প শোনানোর জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশুধু পড়ালেখা করলে হবে না, মানবতার সেবাও করতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে