পরিবারসহ ‘আত্মগোপনে’ ট্রুডো

করোনা বিধিনিষেধ নিয়ে উত্তাল কানাডা ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামে ট্রাক চালকদের বিক্ষোভ

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ

কানাডায় ট্রাক চালকরা দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানী অটোয়ায় বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। আর এই ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাড়ি ছেড়ে পরিবারসহ আত্মগোপনে চলে গেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। করোনা টিকাসংক্রান্ত বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের দাবিতে ট্রাকচালকরা ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামে এই বিক্ষোভ করছেন। কিন্তু টিকা এবং লকডাউন বিরোধী আরো হাজার হাজার মানুষও এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। গতকাল দেশের রাজধানীতে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে প্রতিবাদ দেখান। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে টিকাকরণ বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। মাস্ক পরা এবং লকডাউনের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সপরিবারে আত্মগোপন করেছেন। তাঁর অবস্থান সম্পর্কে জানাতে অস্বীকার করেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দফতর।

কানাডার সরকার ১৫ জানুয়ারি আন্তসীমান্ত ট্রাকচালকদের জন্য করোনার টিকাসংক্রান্ত আদেশ জারি করে। এর ফলে যে ট্রাকচালকেরা টিকা নেননি, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দেশে ফিরলে প্রতিবারই তাদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এর পরেই দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। সেই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন বহু সাধারণ মানুষও। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সরকার কাউকে টিকা নিতে বাধ্য করতে পারবে না। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে তাঁরা ফ্যাসিবাদী মানসিকতা বলে চিহ্নিত করেছেন। কানাডার জাতীয় পতাকার পাশে নাৎসিদের প্রতীক এঁকে গতকাল বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন অনেকে। বিক্ষোভের মূলকেন্দ্র পার্লামেন্ট হিলসে নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজির হয়েছেন বহু সাধারণ মানুষও। তাতে লেখা ছিল, ‘মেক কানাডা গ্রেট এগেন’, ‘উই আর হিয়ার ফর আওয়ার ফ্রিডম’। বিবিসির সংবাদ সূত্রে জানা যায়, কানাডায় আন্তসীমান্ত ট্রাকচালকের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার। এর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই টিকা নিয়েছেন।অটোয়ার সংলগ্ন এলাকা থেকে এসে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন ৫২ বছরের টম পিপ্পিন। তিনি বলেন, ছুটির দিনেও কোথাও যেতে পারছি না। না পারছি রেস্তরাঁয় যেতে, না পারছি সিনেমা দেখতে, ঘুরতে যেতে। এই অবস্থা আর সহ্য করা যাচ্ছে না। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক মহিলার বক্তব্য, জানি স্বাস্থ্যবিধির জন্যই টিকা ও অন্যান্য বিধিনিষেধ। কিন্তু জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে এমন বিধিনিষেধ মানা যায় না।
অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসন এক টুইট বার্তায় জানান, ‘সৈনিকের সমাধি ও জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিসৌধ আমাদের দেশের পবিত্র স্থান। যাঁরা কানাডার জন্য লড়াই করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা উচিত।
সকলের কাছে আবেদন, সেই শ্রদ্ধা যেন বজায় থাকে।’ বিক্ষোভকারীরা গতকাল ওই জায়গা দুটিতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর প্রতি। তাঁর সরকারি বাসভবনের চার কিলোমিটার দূরে আন্দোলনের ভরকেন্দ্র।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমিরাতে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
পরবর্তী নিবন্ধতামিমের উইকেট হারাল ঢাকা