৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় পটিয়ায় যুবদল নেতা মামুনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজে শনাক্ত হওয়ার পর যুবদল নেতা মামুনকে বহিষ্কার করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটি। গতকাল শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার পটিয়া পৌর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রশিদ মামুনকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতৃবৃন্দের অপকর্মের কোনো দায়–দায়িত্ব দল নেবে না এবং যুবদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা যায়, পটিয়া পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও তার সহযোগীকে আসামি করে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী এক স্বর্ণ ব্যাবসায়ী। গত বুধবার কঙবাজার জেলার ঈদগাঁও এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল কান্তি দাশ বাদী হয়ে পটিয়া থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন পটিয়া পৌরসভা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মামুন (৩৫) ও তার সহযোগী বিএনপি কর্মী মনির (৩০)। তাদের দুইজনের বাড়ি পটিয়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাগজী পাড়া এলাকায়। বহিষ্কৃত মামুন সদ্য বিলুপ্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনামের অনুসারী বলে জানা গেছে।
পটিয়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কঙবাজার জেলার ঈদগাঁও এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল দাশের রিদি গোল্ড ফ্যাশন নামের একটি স্বর্ণের দোকান রয়েছে। তাদের দোকানের কারিগর রূপন দাশ গত ২৭ অগাস্ট ২১ ক্যারেটের ৬৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাচ্ছিলেন। দিন দুপুরে গাড়িটি চট্টগ্রাম–কঙবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস সড়কের ফারুকী পাড়া পয়েন্টে আসলে পূরবী পরিবহনের সামনে একটি মোটরসাইকেল ও একটি নোহা এসে বাসটি গতিরোধ করে। এরপর তারা বাসটিতে ওঠেন এবং পেছনের সিটে বসা স্বর্ণ কারিগর রূপন দাশকে ‘ছাত্রলীগ কর্মী’ আখ্যা দিয়ে টেনে হিঁচড়ে ও মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে ফেলে। তখন বাসটি চলে যায় চট্টগ্রামের দিকে। এক পর্যায়ে তারা গলায় ছুরি ধরে রুপনকে মারধর করে তার সাথে থাকা ব্যাগ থেকে ২১ ক্যারেটের ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে যুবদল নেতা মামুন ও তার সহযোগী মনিরকে শনাক্ত করে পটিয়া থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে পটিয়া পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক আবছার উদ্দীন সোহেল ও সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিপন আজাদীকে জানান, যুবদলে কোন সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের স্থান হবে না। পটিয়া পৌরসভা যুবদলের কোন নেতাকর্মী যে কোন ধরনের অপরাধে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রহিম সরকার জানান, ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় বুধবার রাতে মামলা করা হয়েছে। আমরা আসামিদের শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।