রাউজান পৌরসভায় সংগ্রহ করা ময়লা-আবর্জনা ও অপঁচনশীল বজ্য প্রক্রিয়াজাত করে দুটি পৃথক ধারায় আয় বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ করেছেন পৌর মেয়র। দুটি প্রকল্পের মধ্যে একটি হচ্ছে ব্লাক সোলজার ফ্লাই প্রকল্প। এটির মাধ্যমে ময়লা আবর্জনা থেকে তৈরি হবে জৈব সার, হাঁস-মুরগি ও মাছের খাবার। আর অন্যটিতে প্লাস্টিক, পলিথিনের মত অপঁচনশীল বজ্য থেকে তৈরি করা হবে প্লাস্টিক দানা। এসব প্লাস্টিক দানায় তৈরি করা হবে নিত্য ব্যবহার্য্য জিনিসপত্র।
জানা যায়, এই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে চলতি বছরের শুরু থেকে নগদ টাকায় বজ্য কিনে নেয়া শুরু হয়। পৌরসভাকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান করার পরিকল্পনার পাশাপাশি পৌর এলাকাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও দূষণ মুক্ত রাখতে এই উদ্যোগ। এই প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পৌর এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী কাঁচা বাজারে সৃষ্ট তরিতরকারির অবশিষ্টাংশ ও হোটেল, বাসাবাড়ির খাবারের উচ্ছিষ্ট, পঁচা ফলমূলের মতো বর্জ্য প্রতিদিন সংগ্রহ করে ময়লার ভাগাড়ে এনে ফেলছে পৌর পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। এসব বর্জ্য থেকে সৃষ্টি করা হচ্ছে ব্লাক সোলজার ফ্লাই (এক ধরণের পোকা)। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরবর্তীতে এই পোকা থেকে রূপান্তর হচ্ছে ব্লাক সোলজার ফ্লাই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কালো রঙের এই মাছি অনেকের কাছে পোকা হিসেবেও পরিচিত। এগুলো আকারে মাছির তুলনায় কিছুটা লম্বা। জীবনচক্র বা লাইফ সার্কেলে এসব পোকা ক্ষণস্থায়ী হলেও পরিবেশের জন্য বড় উপকারী।
জানা যায়, একটি স্ত্রী পোকা প্রতি মাসে পাঁচ থেকে আটশ ডিম দেয়। ব্লাক সোলজার ফ্লাইর প্রজননের জন্য প্রয়োজন হয় ময়লার ভাগাড় বা উচ্ছিষ্ট খাবার। সূত্র মতে, ময়লা ও উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে কয়েকদিনের মধ্যে ওরা মল ত্যাগ করে। এসব মল থেকে সৃষ্টি হয় একরকম লার্ভা। এই লার্ভা থেকে সৃষ্টি হয় পোকা। ২১ দিনের মাথায় যেসব লার্ভায় পোকা হয়ে মরে যায়, সেগুলোই খামারের হাঁস-মুরগি আর পুকুরের মাছের জন্য সুস্বাদু খাবার। আর যেসব লার্ভা বেঁচে থাকে সেগুলো থেকে জন্ম নেয় ব্লাক সোলজার ফ্লাই। পরিণত বয়সে এসব ব্লাক সোলজার ফ্লাই যে মল ত্যাগ করে সেটি আবার জৈব সার হিসেবে শাক-সবজি ও ফসলের মাঠে ব্যবহার করা হয়।
এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ বলেছেন, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির পরামর্শ ও অনুপ্রেরণায় এসব প্রকল্প বাস্তাবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এসব প্রকল্প পরিকল্পনার মধ্যে কর্মসংস্থান হয়েছে শত শত মানুষের। সবচেয়ে বড় কথা এসব উদ্যোগের ফলে পৌর এলাকাসহ গোটা রাউজান থাকবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশ বান্ধব। সবখানে ফুটে উঠবে গ্রীণ, পিংক ও ক্লিন রাউজানের প্রতিচ্ছবি। প্রকল্পটি কখন উদ্বোধন হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এই প্রকল্পের স্বপদ্র্রষ্ট্রা এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। তার নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রকল্পের উদ্বোধন করে বানিজ্যিক উৎপাদনে যাবেন।










