ড্রোন ক্যামেরা উড়বে সবগুলো পশুর হাটে

পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টিনী পুলিশের

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৪ জুলাই, ২০২২ at ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ

জমে উঠতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম নগরীতে পশুর হাট। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় গরুর বাজারগুলোকে ঘিরে পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করা হচ্ছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবারও গরুর বাজারে উড়বে ড্রোন ক্যামেরা। আগামী ৫ জুলাই দামপাড়া পুলিশ লাইন্স
সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে বিস্তারিত জানাবেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।
সিএমপির জনসংযোগ কর্মকর্তা এডিসি শাহদাত হোসেন রাসেল বলেন, গবাদি পশু ক্রয়-বিক্রয়, চামড়া ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন, জাল নোটের ব্যবহার রোধ এবং পশুহাটের সার্বিক আইন শৃংক্সখলা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে পুলিশ। পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতেই মাঠে থাকবে পুলিশ। পশুর বাজার কেন্দ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নগরীর সবকটি পশুর হাটে ড্রোন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হবে।
পবিত্র ঈদ উল আজহার বাকি আর মাত্র ৫ দিন। এ ছাড়াও এই ঈদকে কেন্দ্র করে অপরাধ দমনে সিএমপির পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বেশকিছু পদক্ষেপ ও সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ। র‌্যাব-পুলিশের ৫ স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়তে সমন্বিতভাবে কাজ করবে র‌্যাব, পুলিশ ও এপিবিএন। ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ড্রোন ক্যামেরা, আর্চওয়ে গেট, ওয়াচ টাওয়ার ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মাঠে সক্রিয় থাকবে। নগদ টাকা বহনে পুলিশি স্কট দেয়া হবে কোনো ধরনের সার্ভিস চার্জ ছাড়াই।
জানা গেছে, এবার ঈদে নিরাপত্তার ৫টি স্তরের মধ্যে রয়েছে (১) কোরবানির পশুর হাটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণের নিরাপত্তা, (২) যাত্রীদের বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন ও লঞ্চঘাট এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, (৩) ঈদ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, (৪) পশুর চামড়া ক্রয় বিক্রয় ও পরিবহনে নিরাপত্তা এবং (৫) ঈদের আনন্দে পর্যটকরা যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকেন সেজন্য ঈদ ও ঈদ পরবর্তী সময়ে দর্শনীয় স্থানসহ আবাসিক এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।
এদিকে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে নগরীর ১১টি পশুর হাটে নিরাপত্তা, বাস স্টেশন, রেল স্টেশন, চার শতাধিক ঈদ জামাতের আয়োজন, ৫৪টি এলাকাভিত্তিক কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয় বিক্রয়ের স্থান, ১৫টি বিনোদন কেন্দ্র এবং ১৪৬টি আবাসিক এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ। পশুর হাটগুলোতে সাব-কন্ট্রোল রুম, পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প, ওয়াচ টাওয়ার, জাল টাকা সনাক্তকরণ বুথ, পশু চিকিৎসার বুথ ও ব্যাংকের বুথ স্থাপন করা হয়েছে। বাস স্ট্যান্ড ও রেল স্টেশনে পুলিশের সাব-স্টেশন ও কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটসমূহে পুলিশ মোতায়েনসহ টহল পুলিশের ব্যবস্থা থাকছে। প্রধান ঈদের জামাত হিসেবে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ এলাকায়ও ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করবে সিএমপি।
এদিকে নগরবাসীর সচেতনতা বাড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে বেশকিছু সতর্কতা অবলম্বন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পশুর হাটে ও ঈদযাত্রার সময় অজ্ঞানপার্টি ও মলমপার্টি হতে রক্ষা পেতে লোভে পড়ে অপরিচিতজনদের কাছ থেকে কোনো কিছু খেতে নিষেধ করেছে পুলিশ। ইজারাদার ও পশু ব্যবসায়ীদের কাছে আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ, যেন বাজারের বাইরে রাস্তায় কোনো পশু রাখা না হয়।
পরিবহন মালিক ও চালকদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে যাত্রীদের কাছ থেকে যেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা হয়, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, অস্থায়ী কাউন্টার স্থাপন, ফিটনেস বিহীন গাড়ি রাস্তায় নামাতে নিষেধ করা হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কোনো চালকের কাছে যেন গাড়ির দায়িত্ব না দেয়া হয়। এদিকে, পোশাক শ্রমিকদের বেতন বোনাসসহ ওভারটাইম মজুরি পরিশোধে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ যেন সুষ্ঠু পরিস্থিতি বিরাজে ভূমিকা রাখে সেদিকেও নজর দেবে পুলিশ। ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে বাসার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গ্যাসের চুলা বন্ধ রাখা, ইলেকট্রিক ফ্যান ও সুইচ বন্ধ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।