টেকনাফের ব্যবসায়ী কুমিল্লায় খুন

টেকনাফ প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

কুমিল্লায় টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড নাজির পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী মো. মুছা আলীকে (৪০) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। গত বুধবার রাত ৯টার দিকে ঢাকাচট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার বাগুর বাস স্টেশনের উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে। চার সন্তানের জনক নিহত ব্যবসায়ী টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়ন ৮ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর নাজির পাড়া এলাকার মৃত মাজেদ আলীর পুত্র। তিনি দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের তুলাগাঁও গ্রামে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন।

কুমিল্লায় থাকা নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী নাজিয়া আক্তারের বরাত দিয়ে দেবিদ্বার থানা পুলিশ জানিয়েছে, তার স্বামী মো. মুছা বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পরিচিত একজনের মোবাইল ফোনে কল পেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হন। এরপর রাত ৯টার দিকে ভিকটিমের মোবাইল থেকে তার স্ত্রীর মোবাইলে কল করে এক ব্যক্তি জানায়, তার স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। টাকা দিলে ১০ মিনিট পর ছেড়ে দেয়া হবে। এ কথা বলে অপহরণকারীরা একটি বিকাশ নাম্বার দেয়। ওই নম্বরে ৩০ হাজার টাকাও পাঠানো হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা মুছা আলী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে খবর পায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, বুধবার রাত ৯টার দিকে কয়েকজন যুবক মুছা আলীকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপর তার শোর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে নিহতের স্ত্রী রাজিয়া আক্তার আরো জানান, কক্সবাজারেরউখিয়া জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন একটি দোকান আছে তার। তিনি ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে কাপড়, জুতা ও কসমেটিকস ক্রয় করে দোকানে বিক্রি করতেন। বুধবার রাতে সোহেল নামের পরিচিত এক ব্যক্তির কল পেয়ে বাসা থেকে বের হন। পরে সোহেল ও তার সহযোগীরা তাকে অপহরণ করেছে বলে প্রথমে ১০ লাখ টাকা চেয়েছিল। পরে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে তাদের দেওয়া একটি বিকাশ নম্বরে ৩০ হাজার টাকা পাঠাই। তবে তাদের চাহিদা মত মুক্তিপণ না পাওয়ার কারণে তার স্বামীকে হত্যা করেছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ নয়ন মিয়া জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে তিনটি মাদক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গত রোববারও কুমিল্লার আদালতে একটি মাদক মামলার হাজিরা ছিল। হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা নিহতের পূর্ব পরিচিত। এর নেপথ্যে মাদক কিংবা আর্থিক বিরোধ থাকতে পারে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড নাজির পাড়ার বাসিন্দা নিহত মুছা আলীর প্রথম স্ত্রী চার সন্তানের জননী আজিদা বেগম জানান, দীর্ঘ ১৪ বছর আগে মুছা আলীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে বর্তমানে দুটি মেয়ে ও দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ব্যবসার কাজে কুমিল্লায় আসাযাওয়া করতে করতে সেখানে আরেকটি বিয়ে করেন তিনি। তার দাবি, টাকার জন্য তার স্বামীকে সুকৌশলে আটকে রেখে হত্যা করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসামাজিক অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন সম্ভাব্য ৯ প্রার্থী, করছেন জনমত যাচাই
পরবর্তী নিবন্ধতুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার মহড়া, সতর্ক বিজিবি