চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে সরাসরি ভোট না করার সুপারিশ

প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা

| সোমবার , ২১ এপ্রিল, ২০২৫ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বাধীন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে স্থানীয় সরকার কাঠামো এবং নির্বাচন পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ অনুযায়ী, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন জনগণের সরাসরি ভোটে না করে প্রথমে সদস্য বা কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত করা হবে। পরে নির্বাচিত কাউন্সিলর ও সদস্যদের ভোটে চেয়ারম্যান ও মেয়র নির্বাচন করা হবে। সদস্য বা কাউন্সিলর পদে পূর্ণকালীন সদস্যের পাশাপাশি খণ্ডকালীন সদস্য রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় সরকারি চাকরিজীবীরাও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরে সদস্য হওয়ার সুযোগ পাবেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করারও সুপারিশ করেছে কমিশন। খবর বিবিসি বাংলা ও বিডিনিউজের।

প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন কমিশনের সদস্যরা। সেখানে কমিশনের সুপারিশগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, আদিমতম রাষ্ট্র হচ্ছে স্থানীয় সরকার। ব্রিটিশ আমল থেকে এর পরিচালন নীতি ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখনও সেটা বলবৎ, ডিসি অফিস এর নিয়ন্ত্রণ করে। এখনকার সরকার ব্যবস্থাটা রেডিক্যাল (আমূল) চেঞ্জ করতে হবে। ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পর্যায়ে গণতান্ত্রিক রূপ দিতে বলেছি।

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, এখন ইউনিয়ন, উপজেলা পরিষদ ও এ ধরনের স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত চেয়ারম্যানের হাতে অধিকাংশ ক্ষমতা থাকে। সদস্যদের হাতে তেমন ক্ষমতা থাকে না। সেজন্য নির্বাচন থেকে চেয়ারম্যান পদ বাদ দিতে বলেছি। নির্বাচিত সদস্যরা তাদের পরিষদ প্রধান নির্বাচিত করবেন। প্রয়োজনে ছোট পরিসরের একটি পর্ষদ গঠন হবে। তাহলে স্থানীয় সরকার পরিচালনায় সব নির্বাচিত প্রতিনিধি ভূমিকা রাখতে পারবেন। এক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা যাবে না।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন পদ্ধতিতে সংস্কার আনার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, পৌর ও সিটি কর্পোরেশনেও একই সিস্টেম করতে হবে। এখন পাঁচটি মৌলিক আইনে স্থানীয় সরকার চলে। এটাকে একটা আইন ও কিছু বিধি দিয়ে পরিচালনা করা সম্ভব। ২০২১ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে হিসাব করে দেখা গেছে ২২৫ দিন চলে যায় এই নির্বাচন শেষ করতে। এটা ৪০ দিনে নামিয়ে আনা সম্ভব। এই নির্বাচনে ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। সেটাও কয়েক গুণ কমে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাড়ছে পেঁয়াজের ঝাঁজ, সরবরাহ সংকটের অজুহাত
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬