একত্রিত হচ্ছে দুই ‘সুপারম্যাসিভ’ ব্ল্যাক হোল

| রবিবার , ১৭ নভেম্বর, ২০২৪ at ৮:৪৮ পূর্বাহ্ণ

দুটি বিশালাকায় ব্ল্যাক হোল একে অপরের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, এমনই দাবি গবেষকদের। ২০২১ সালের মার্চে, দূরের এক ছায়াপথে জ্যোতির্বিদরা এক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন আলোর বিস্ফোরণ পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। ‘এটি ২০২১এইচডিআর’ নামে ডাকা বিস্ফোরণটি সে সময় ‘সুপারনোভা’ হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল বলে উঠে এসেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজের প্রতিবেদনে। কিন্তু এতে বেশ কয়েকটি রোমাঞ্চকর বৈশিষ্ট্য থাকার কথা বলেছে জ্যোতির্বিদ্যাবিষয়ক জরিপ ব্যবস্থা ‘অটোমেটিক লার্নিং ফর দ্য র‌্যাপিড ক্লাসিফিকেশন অফ ইভেন্টস (এএলইআরসিই)’। খবর বিডিনিউজের।

২০২২ সালে এমনই আরেকটি বিস্ফোরণের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ হয়েছিল। এর কিছু সময় পর ‘জুইকি ট্রাঞ্জিয়েন্ট ফ্যাসিলিটি (জিটিএফ)’র জরিপে উঠে এসেছিল, এ ধরনের বিস্ফোরণ প্রতি ৬০৯০ দিন পরপর ঘটে থাকে। এটি নিশ্চিতভাবেই সুপারনোভা নয়। তবে, এটা কী হতে পারে, তা নিয়ে এতদিন ধোঁয়াশা থাকলেও সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ওই রহস্যের জট খুলেছে। এর মধ্যে একটি সম্ভাব্য ধারণা ছিল, এটি ২০২১এইচডিআর আসলে এক ধরনের ‘টাইডাল ডিসরাপশন ইভেন্ট (টিডিই), যেখানে কোনো তারা ব্ল্যাক হোলের খুব কাছাকাছি যাওয়ার পর ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর ফলে, সেখানে পর্যায়ক্রমিক বিস্ফোরণ ঘটতে পারে কারণ তারার বিভিন্ন অবশিষ্টাংশ ব্ল্যাক হোলকে প্রদক্ষিণ করে। কিন্তু টিডিই’র বেলায় এ ধরনের বিস্ফোরণের নমানা মেলেনি।

তাই গবেষণা দলটি আরেকটি মডেল বিবেচনায় নিয়েছিল, যেখানে বিশাল এক আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘ একজোড়া ব্ল্যাক হোলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর কম্পিউটার সিমুলেশনে দেখা গেছে, মেঘটিকে একেবারে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে ফেলার বদলে ব্ল্যাক হোলটি ওই মেঘ গিলে খাওয়ার আগে এর সঙ্গে মিশে যায়। এর ফলে, ব্ল্যাক হোলের কক্ষপথে পর্যায়ক্রমিক আলোর বিস্ফোরণ ঘটে থাকে। গবেষণা দলটি ‘নিল গেহরলস সুইফট অবজারভেটরি’র টেলিস্কোপ দিয়ে এটি ২০২১এইচডিআর পর্যবেক্ষণ করেছে, যেখানে অতিবেগুনি ও এক্সরের পর্যায়ক্রমিক দোলন দেখা গেছে, যার মিল রয়েছে ‘জিটিএফ’র পর্যবেক্ষণ করা ক্ষণস্থায়ী বিস্ফোরণের সঙ্গে। ওই ডেটার হিসাবে, ব্ল্যাক হোলগুলো প্রায় চার কোটি সূর্যের মোট ভরের সমান। আর প্রতি ১৩০ দিনে এগুলো একে অপরকে আবর্তন করে থাকে। ব্ল্যাক হোল দুটি নিজেদের পথ ধরে এগোতে থাকলে প্রায় ৭০ হাজার বছরের মধ্যে এরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হবে। কিন্তু ‘ওই প্রবাহমান মেঘ ছাড়া আমরা হয়ত এর হদিস কখনওই পেতাম না’ বলে প্রতিবেদনে লিখেছে নোরিজ। গবেষণা দলটির লক্ষ্য, এই সিস্টেম নিয়ে নিজেদের পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাওয়া যাতে তাদের মডেলটি আরও নিখুঁত করা যায়। এ ছাড়া, নিজস্ব ছায়াপথে বিভিন্ন ব্ল্যাক হোল কীভাবে একে অপরের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া ঘটায়, সে সম্পর্কে তাদের আরও গবেষণার পরিকল্পনা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবেক এমপি ইকবাল ও তার স্ত্রী চিত্রনায়িকা শিল্পীর ব্যাংক হিসাব জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধসরু রাস্তায় ফায়ার সার্ভিস যেতে দেরি, আগুনে পুড়ল ৫ ঘর