১.
আত্মসমর্পণের আগমুহূর্তেই সে আমার ঘাড় বরাবর তরবারি চালালো। অর্ধেক মুণ্ড নিয়ে আমি একটু পেছনে সরে আসলে সে রত্নখচিত খাপে তরবারি ভরে একটু চকিত হাসলো। সে হাসি ক্রুর নাকি প্রেমময়, বৈশাখের কোকিলের বিরতিহীন আর্তিতে বোঝা গেল না তার বিন্দুবিসর্গ। না উন্নত, না অবনত শিরে আমি তার পরবর্তী আঘাতের অপেক্ষায় রইলাম, হয়তো অর্ধহননে আমার আর্তনাদে সে ভালোবাসার মূর্চ্ছনাধ্বনি শুনতে পেয়েছিল, তাই বাকিজীবন সে আর তরবারির হাতল স্পর্শ না করার স্পর্ধা দেখাল।
২.
দমকা হাওয়া আর গুঁড়ি বৃষ্টি শান্ত হলে পলাশের ডাল থেকে কোকিলের কুহু’র সাথে সে আচমকা নেমে এলো বোরাকের মতো। চোখের ক্ষিপ্র আলোয় ঘনীভূত অপরাহ্নের ছায়ায় যে করুণ রঙ ঢেউ খেলেছিল তার এপ্রোনের রঙে, চেয়ে দেখা ছাড়া প্রশংসার সাহস আমি খুঁজে পাই নি, যদিও হেসেছিল জারুলের বেগুনী ফুলগুচ্ছ, আমি ছিলাম বৃষ্টিধৌত মাঠের মত বিহবল ও টালমাটাল ।
জলবাষ্পের মুগ্ধতা ছড়িয়ে মেঘ উড়ে গেল দক্ষিণ থেকে উত্তরের পাহাড় ঘেঁষে, সে–ই জানে আমি তার মেরুন আর ঘিয়ে রঙের মিশেলে কতক্ষণ বশীভূত ছিলাম।