নগরীতে বুথ খুলে জাতীয় সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিনের নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে পুলিশ। শ্রমজীবী মানুষের কথা মাথায় রেখে এ উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। তবে সব ধরনের নাগরিকরাই এ সুবিধা পাচ্ছেন। সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর গতকাল বৃহস্পতিবার বুথটি উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি ভ্যাকসিনের নিবন্ধনের জটিলতা এড়াতে নাগরিকদের সিএমপির উদ্যোগে খোলা বুথে গিয়ে সেবা নেওয়ার আহ্বান জানান। দেশে পুলিশের পক্ষ থেকে সিএমপিই প্রথমবারের মতো এমন উদ্যোগ নিয়েছে। নগর পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার বিজয় বসাকের পরিকল্পনায় নিবন্ধন কার্যক্রমে সহায়তা দিচ্ছে ‘যাত্রী ছাউনি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সরেজমিনে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই বুথে গিয়ে দেখা যায়, ১৬ জন ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ পান-সিগারেটের দোকানি, কেউ দোকান কর্মচারী, রিকশাচালক ও প্রবীণরাও আছেন। তবে ধীরে ধীরে ভিড় বাড়ছিল এবং পুলিশ তাদের সামাজিক দূরত্ব মেনে সারি বেঁধে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছিল। নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি এবং এক কপি অনুলিপি জমা দিতে হচ্ছে। দু’টি ল্যাপটপে ‘যাত্রী ছাউনি’র স্বেচ্ছাসেবীরা আলাদা-আলাদাভাবে নিবন্ধন করছেন। নিবন্ধন শেষে ‘নিবন্ধিত স্লিপের’ সঙ্গে মূল এনআইডি কার্ড ফেরত দেওয়া হচ্ছে। তবে এর আগে নিবন্ধন খাতায় লিখে রাখা হচ্ছে তাদের নাম-ঠিকানা, এনআইডি ও মোবাইল নম্বর। নিবন্ধনের সময় পুলিশ ও ‘যাত্রী ছাউনি’র স্বেচ্ছাসেবীরা সেবা প্রার্থীদের কাছ থেকে সুবিধাজনক কেন্দ্রের নাম জেনে তাদের ইচ্ছা অনুসারেই কেন্দ্র নির্ধারণ করে দিচ্ছেন।
দুপুর ১টার দিকে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর কোতোয়ালীর মোড়ে বুথে নিবন্ধন কার্যক্রম পরিদর্শনে যান। তিনি সেবা নিতে আসা লোকজনকে শুভেচ্ছা জানান। সিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, যারা সুরক্ষা অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন না বা সুযোগ নেই অথবা ঝামেলা বোধ করছেন। তারা যাতে ভ্যাকসিনেশনের বাইরে না থাকেন, সেজন্য আমাদের এই উদ্যোগ। আমাদের কার্যক্রমে ‘যাত্রী ছাউনি’ সংগঠন সার্বিক সহায়তা দিচ্ছে। মূলত সরকারের ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমকে গতিশীল করতেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। নিবন্ধন কার্যক্রমের উদ্যোক্তা নগর পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার বিজয় বসাক আজাদীকে বলেন, প্রতিটি মানুষকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের আওতায় আনার লক্ষ্যে আমরা ‘যাত্রী ছাউনি’ সংগঠনকে নিয়ে নিবন্ধন সেবা কার্যক্রম শুরু করেছি। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কোতোয়ালীর মোড়ের এই বুথে নিবন্ধন চলবে। শুধুমাত্র ঈদুল আযহার বন্ধের সময় তিনদিন বন্ধ থাকবে। ভবিষ্যতে দক্ষিণ বিভাগের অধীনে আরও কয়েকটি এলাকায় এই সেবা চালু করার পরিকল্পনা আছে আমাদের। কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন আজাদীকে বলেন, শুধুমাত্র নিবন্ধনকে ঝামেলা মনে করে অনেকে ইচ্ছা থাকার পরও সেটা করেননি। আবার অনেকে নিজেরা করতে পারেন না। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় টাকা দিয়ে নিবন্ধন করা হচ্ছে, এমন অভিযোগও আমরা পেয়েছি। পুলিশের এই বুথ থেকে সার্বিকভাবে মানুষ উপকৃত হবে বলে আমরা আশা করছি।
