ফেইসবুক শিশুদের ক্ষতি করছে, বিভক্তি উসকে দিচ্ছে ও গণতন্ত্রকে দুর্বল করছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এক কর্মী। ৩৭ বছর বয়সী ফ্রান্সেস হাউগেন একসময় ফেইসবুকের পণ্য ব্যবস্থাপক ছিলেন, সামপ্রতিক সময়ে তিনি ‘হুইসেলব্লোয়ারের’ ভূমিকা নিয়ে ফেইসবুকের অভ্যন্তরীণ অনেক নথি গণমাধ্যমকে দিয়েছেন, বলে যাচ্ছেন সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটির নেতিবাচক ভূমিকার কথা। খবর বিডিনিউজের।
হাউগেন মঙ্গলবার ক্যাপিটল হিলের শুনানিতে ফেইসবুককে তুলোধুনো করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুক। তাদের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীই ২৭০ কোটি। সামপ্রতিক বছরগুলোতে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা রক্ষায় ব্যর্থতা এবং গুজব ছড়ানো রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাউগেন জানান, তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে (ডব্লিউএসজে) ফেইসবুকের বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ নথি দিয়েছেন। সেসব নথির ওপর ভিত্তি করে ডব্লিউএসজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইনস্টাগ্রামের করা গবেষণায় দেখা গেছে অ্যাপটি ব্যবহারে কমবয়সী মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। মঙ্গলবার সেনেটের শুনানিতে দেওয়া সাক্ষ্যেও হাউগেন এ বিষয়েই জোর দেন।
তিনি বলেন, কোম্পানির নেতৃত্ব জানে কীভাবে ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামকে নিরাপদ রাখা যায়; কিন্তু তারা এজন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো করবে না, কেননা তারা আকাশচুম্বী লাভকে মানুষের ওপর স্থান দিয়েছে। ফেইসবুকে মার্ক জাকারবার্গের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব নিয়েও সমালোচনা করেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এ কর্মী। হাউগেন সোমবার বিশ্বজুড়ে ফেইসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপে বিভ্রাটের ঘটনায় খুশি হওয়ার কথাও সেনেটে বলেছেন। তিনি বলেন, আমাদের এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিতন।
শুনানিতে থাকা উভয় দলের সেনেটরদের মধ্যে এদিন বিরল এক ঐকমত্য দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের এ সদস্যরা ফেইসবুকে পরিবর্তন আনা উচিত বলে মন্তব্যও করেছেন। এদিকে মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, বিভিন্ন গণমাধ্যম এখন যেভাবে ফেইসবুককে দেখাচ্ছে, তা ভুল চিত্র। কর্মীদের কাছে লেখা এক চিঠিতে তিনি বলেন, ফেইসবুকের বিরুদ্দে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, তার বেশিরভাগই ভিত্তিহীন।