আজ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ‘সাহেব ও মোসাহেব’ কবিতা মনে পড়ছে খুব। বাস্তবতার নিরিখে লেখা আমি এ কবিতা পড়ে যেমন তৈলবাজদের চরিত্র সম্পর্কে কিছুটা শিক্ষা অর্জন করেছি তেমনিভাবে আনন্দও উপভোগ করেছি। বর্তমানে এদের সংখ্যা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন কোন ক্ষেত্র নেই যাতে এদের বিচরণ নেই। এদের মূল উদ্দেশ্য হলো কর্তা থেকে অন্যায়ভাবে ফায়দা হাসিল করা। এদের এহেন ঘৃণিত অপকর্মের দ্বারা ভালো মানুষকে অনেক ক্ষেত্রে নিগৃহীত-অপমানিত এবং যোগ্য আসন হতে বঞ্চিত হতে হয়। বাস্তবে এদের সংখ্যা খুব বেশি না হলেও এদের মুখের মিষ্টি ভাষা এবং কূটবুদ্ধির কাছে অনেক জ্ঞানী ব্যক্তিকেও কিছু সময়ের জন্য হলেও ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। এতে যোগ্য ব্যক্তিকে যেমন বঞ্চিত হতে হয় তেমনিভাবে জ্ঞানী কর্তা ব্যক্তিকেও পরবর্তীতে সমালোচনার বা ক্ষেত্রবিশেষে অপমানের সম্মুখীন হতে হয়। কবিতার শেষে সাহেব যেমন মোসাহেবকে ‘হনুমান আর অপদেব’ আখ্যায়িত করে গালি দেয়ার পরেও সে তা হাসিমুখে মেনে নিয়ে প্রণাম করেছে তেমনি বর্তমান সমাজেও দেখা যায় এদের অসৎ উদ্দেশ্য ফাঁস হওয়ার পরে কর্তা আরো নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করলেও এদের সুশিক্ষা হয়না, বরং অপেক্ষায় থাকে পুনঃ কখন শুরু করবে তার …। অগণিত বার অপমানের সম্মুখীন হওয়ার পরেও এরা নিজের চরিত্র পরিবর্তন করে না, প্রয়োজনে “ডাল” পাল্টিয়ে ফেলে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এমন অপকর্মের মাধ্যমে এরা অনেকাংশে লাভবানও হয়। যারা তৈলবাজদের কথা বিশ্বাস করে আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি নিজেকে ‘অনেক বড়’ মনে করেন তারা ক্ষমতা হারানোর পরে জনগণের মণিকোঠায় নয়, আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হন মর্মে প্রমাণিত হয়েছে। তাই ভয়ঙ্কর তৈলবাজ হতে মুক্ত থাকার পাশাপাশি এদের প্রতিহত করার প্রচেষ্টাই হবে প্রকৃত বুদ্ধিমানের কাজ।