পারিবারিক বন্ধন থাক অটুট

সেমু দে | বৃহস্পতিবার , ৬ মে, ২০২১ at ৫:৩০ পূর্বাহ্ণ

সামাজিক অবক্ষয় রোধে পারিবারিক বন্ধনের প্রয়োজন আজ খুব প্রয়োজন। সন্তানদের বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে এর প্রভাব অপরিসীম। এক সময়ে একান্নভুক্ত পরিবারে মা, বাবা, ভাই, বোন, চাচা, চাচী, নানা, নানু, দিদা, দাদু সহ সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতায় বেড়ে ওঠা জীবন এখন নেই বললে চলে। তৎসময়ে সকলের সাথে সকলের যে এক মধুর সম্পর্ক তা আজ সচরাচর দেখা যায় না। ফলে বাড়ছে দূরত্ব, সম্পর্কের টানাপোড়েনে সকলে হয়ে উঠছে আত্নকেন্দ্রিক, মানবিক গুণাবলি সম্বলিত জীবন হয়ে উঠছে বেপরোয়া। ফলে বাড়ছে হিংসা, বিদ্বেষ, অপমৃত্যু, আত্নহত্যাসহ বিভিন্ন সামাজিক অবক্ষয়ের নমুনা। আধুনিক প্রযুক্তির বদৌলতে প্রতিটি সন্তান নিজেকে নিয়ে নিজে অনেক ব্যস্ত। বাবা, মা, ভাই, বোনসহ পরিবারের সবাইকে একসাথে নিয়ে খাওয়া, আনন্দ উপভোগ করা, পারিবারিক আলাপ আলোচনা, পারিবারিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা, লেখাপড়া সহ সংশ্লিষ্ট সবকিছুই যেন এক দৌড়ের মধ্যে আমাদের জীবন চলমান। অথচ একসময়ে এ সবকিছুই ছিল একটা নির্দিষ্ট পারিবারিক বলয়ে আবদ্ধ। ছিল আনন্দভরা এক মহিমান্বিতা জীবন। আজ – সেকাল আর নেই বলে আমরা দৌড়াচ্ছি প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলে বন্ধনহীন এক জীবনে। যে সন্তানকে মা, বাবা এতো পরিশ্রম করে মানুষ করলো একটু সুখের আশায়! তা আজ মেখি। কালেভদ্রে আজ পারিবারিক সেই বন্ধন অনেকদূরে। সন্তানের সময় নেই মা,বাবার সাথে সময় দেওয়ার, প্রাণখুলে কথা বলার, আনন্দ ভাগাভাগি করার। ফলে আমরা যারা সন্তানের পিতা, মাতা হলাম আমরা আমাদের সন্তানদের পারিবারিক এই সম্পৃক্ততায় বেড়ে উঠতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি না। এতে সমূহ বিপদ তৈরি হচ্ছে। প্রকৃত মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে পারছি না আমাদের সন্তানদের। ফলে বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয়। সন্তান চিনে না, জানে না পারিবারিক সম্পর্ক ও আনন্দ কি জিনিস! তাই আজ সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার সাথে প্রতিটি সন্তানদের বেড়ে উঠা হোক পারিবারিক বন্ধনের এক মেলবন্ধন। আমাদের অনাগত সন্তানেরা হোক মানবিক গুণাবলি সমৃদ্ধ এক অনন্য মানুষ। পরিবার হোক আনন্দময় জীবনের পথচলা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতৈলবাজ অত্যন্ত ভয়ঙ্কর
পরবর্তী নিবন্ধপরিবার বা সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো বিশ্বাস