চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে জীবন– জীবিকার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে এখন সর্বত্র। যেখানে প্রচলিত পেশার তিনভাগের দুইভাগ ২০৩০ সালের মধ্যে অবলুপ্ত হয়ে যাবে এবং ৬৫%শিক্ষার্থী যারা এখন প্রাথমিক শিক্ষায় আছে তারা কর্মজগতে প্রবেশ করে যে কাজ করবে তা এখনো অজানা।
কোভিডের মতো মহামারী, স্থানীয় ও বৈশ্বিক অভিবাসন, দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন, সংঘাত, প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার, জীবিকার পরিবর্তন ইত্যাদির কারণে ভৌগোলিক ও সামাজিক কাঠামোর পরিবর্তনের পাশাপাশি মানুষের জীবনধারা ও মনোসামাজিক জগতে দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার নতুন কারিকুলামের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে হাতে কলমে ও বাস্তব শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে এর বাস্তবায়ন। এক্ষেত্রে এস ডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়ন শীল দেশে উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পদার্পণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন। প্রাক্– প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাক্রমের নিরবচ্ছিন্ন সামঞ্জস্য বিধান। শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক ও আনন্দময় পড়াশোনায় পরিবেশ সৃষ্টি। বিষয় এবং পাঠ্যপুস্তকের বোঝা ও চাপ কমিয়ে দক্ষতা ও যোগ্যতার গুরুত্ব আরোপ। গভীর শিখন ও তার প্রয়োগে গুরুত্ব প্রদান। মুখস্থ নির্ভরতার পরিবর্তে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রম ভিত্তিক শিখনে অগ্রাধিকার প্রদান। খেলাধুলা ও সৃজনশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে শিখনের উপর গুরুত্ব প্রদান। নির্দিষ্ট দিনের শিখনকাজ যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শেষ হয় সে ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা এবং আনন্দময় কাজে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে বাড়ির কাজের চাপ কমানো। নির্দিষ্ট সময়ে অর্জিত পারদর্শিতার মূল্যায়ন ও সনদ প্রাপ্তির প্রতি গুরুত্ব আরোপ। জীবন ও জীবিকার সাথে সম্পর্কিত শিক্ষা এখানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিদ্যালয়ে সুন্দরভাবে পাঠদানের জন্য সরকার প্রথমে মাস্টার ট্রেইনার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। পরে জেলায় জেলায় মাস্টার ট্রেইনাররা অন্য সকল শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
প্রতিটি বিষয়ের উপর চলছে একসাথে পাঁচ দিনের এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। শিক্ষার কার্যক্রম ব্যাহত না হওয়ার জন্য শুক্রবার ও শনিবার করে দেয়া হচ্ছে এই প্রশিক্ষণ।
এই সকল কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় –
চলছে মাধ্যমিক শাখার শিক্ষকদের নতুন কারিকুলামের ট্রেনিং। এই বছর সকল মাধ্যমিক শাখায় ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলামের বই বিতরণ করা হয়েছে। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেুণিতে দশটি বিষয়ের উপর হবে মূল্যায়ন। কোন শিক্ষক প্রশিক্ষণ ছাড়া শ্রেনিতে পাঠদান করাতে পারবে না। তাই সকল শিক্ষককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পাঠদানের উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। দশটি বিষয় দিয়ে হবে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জনে মূল্যায়ন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাস্তবধর্মী শিক্ষার প্রচলন করে শিক্ষার্থীদের আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলছে। এই সুন্দর আয়োজন সার্থক ও সফল হোক এই প্রত্যাশা করছি।