অতিমারী করোনার বিভৎস তান্ডবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।মানুষের জীবন যাত্রায় কখন যে স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে তা বলা মুশকিল। সবকিছু কেমন যেন আড়াল হয়ে যাচ্ছে।এক বছর তিন মাস হয়ে গেলো কারো সাথে স্বাভাবিক কোন যোগাযোগ নেই। স্কুলও বন্ধ, যাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখি সেই অরুণ প্রাতের তরুণ ছাত্রছাত্রীরাও কাছে নেই। স্কুলের সবুজ মাঠ জুড়ে হৈ হুল্লোড়, খেলাধুলা, চেচামেচি চিৎকার, ক্লাসে পাঠদান, লাইব্রেরীতে বসে বই পড়া, বিতর্ক, নাচ গান সবিই এখন স্মৃতি মনে হয়।অনলাইন ক্লাস এবং ছাত্রছাত্রীদের এসাইনমেন্ট জমা দেয়া নেয়ার কারণে প্রতিদিন ২/৩ ঘন্টা স্কুলে গেলেও মনের অজান্তে একধরনের চিন্তা ও হতাশা জমাট বাঁধে। কি হবে এই অবুঝ শিশুদের? সবকিছু যেন একটি যায়গায় থেমে আছে। ক্লাসে পাঠদান ছাড়া কখনো লেখাপড়া এগিয়ে নেয়া যায়না। ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে মা-বাবাদেরও চিন্তার শেষ নেই। প্রাণপ্রিয় ছাত্রছাত্রীদের মুখের দিকে তাকানো যায় না। পাঠদান বন্ধ থাকায় যে ক্ষতি তাদের হচ্ছে তা কখনও পূরণ হবার নয়।অনেকে পাঠ্য বইয়ের নাম পর্যন্ত ভুলে গেছে।খোঁজ নিয়ে জানাযায়,বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ছাত্রছাত্রীরা ঘরে বসে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিলেও আমরা দেশের প্রত্যন্ত আঞ্চলে এখনও অনলাইন শিক্ষার সুফল পৌঁছাতে পারিনি। অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক অনলাইন ক্লাস সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল নয়। সবকিছুই যেন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের কয়েকটি জেলায় এই মুহূর্তে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার যে ভাবে বাড়ছে তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখন খুলবে তাও নিশ্চিত নয়। শিক্ষা ব্যবস্থা সহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কথা ভেবে এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিনা কারণে বাইরে ঘোরাঘুরি বন্ধ করতে হবে।কিন্তু দুঃখ ও পরিতাপের সাথে বলতে হয়,বর্তমান সময়ে এসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যার কারণে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগী। এই মুহূর্তে দেশ এবং দেশের মানুষকে বাঁচাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই।