চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ একটি মাঠ সাগরিকাস্থ বিভাগীয় মহিলা কমপ্লেক্স মাঠটি। চট্টগ্রামের ক্রিকেটের নিচের দিকের প্রায় সবগুলো ম্যাচই অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠে। সে সাথে বিসিবির বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটের ম্যাচ গুলোও আয়োজিত হয় এই মাঠে। কিন্তু খেলার চাপে পিষ্ট হতে যাওয়া এই মাঠ এবং মহিলা কমপ্লেক্স হোস্টেল, জিমনেসিয়াম মিলিয়ে এই কমপ্লেক্সটি সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে একাধিকবার। এই মাঠের পাশে আরো বড় একটি জায়গা রয়েছে। সেটিকেও মাঠে পরিণত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সে প্রস্তাব পাস করা যায়নি। প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার এই প্রকল্পটি বারবার পাঠানো হলেও তা কার্যকর করেনি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
কারণ হিসেবে জানা গেছে এত স্বল্প ব্যয়ের প্রকল্প সহজে পাশ করানো যায়না। কারণ এইসব প্রকল্পের সাথে আরো অনেক কিছু জড়িত থাকে। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একাধিক প্রকল্পকে এক করে একটি বড় প্রকল্প প্রণয়নের তাগিদ দিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (অর্থ) মোহাম্মদ সাইদুর রশিদ। গতকাল তিনি চট্টগ্রামে ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। যার মধ্যে রয়েছে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম, জিমনেসিয়াম, সুইমিং পুল, আউটার স্টেডিয়াম, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম এবং বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স। আর সে সময় একাধিক প্রকল্পকে এক করে একটি বড় প্রকল্প প্রেরণের পরামর্শ দেন।
এই মুহূর্তে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে সবচাইতে বড় প্রয়োজন হয়ে দেখা দিয়েছে বিভাগীয় মহিলা কমপ্লেক্সের উন্নয়ন। সেই সাথে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামের উন্নয়ন এবং আধুনিকায়ন, আউটার স্টেডিয়ামের উন্নয়ন এবং আধুনিকায়ন মিলিয়ে একটি বড় প্রকল্প প্রণয়নের পরামর্শ দেন তিনি। সে সাথে যোগ হতে পারে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের ফ্লাড লাইটের সংস্কার। যেখানে আউটার স্টেডিয়ামে স্থাপতি ফ্লাড লাইটের টাওয়ার ছোট করার প্রয়োজনীয়তাটা বেশি করে দেখা দিয়েছে। কারণ তাতে আউটার স্টেডিয়ামের অনেক জায়গা বেড়ে যাবে। যা মাঠের আকারও বাড়াবে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এই কর্মকর্তা চট্টগ্রামে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উপ পরিচালক আসলাম হোসেনকে বলেন, ভবিষ্যতের কথা ভেবে বড় প্রকল্প প্রণয়ন করতে হবে। যাতে লম্বা সময় আর কোন কাজে হাত দিতে না হয়। কারণ একটি প্রকল্পের সাথে অনেক কিছু জড়িয়ে থাকে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চট্টগ্রামের উপ পরিচালক আসলাম হোসেন খান জানান, যে চারটি প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে তাতে কত খরচ হতে পারে সেটা বলা যাবে যখন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রকৌশলীরা জরিপ কাজ সম্পন্ন করবেন। তবে সেটা হয়তো অর্ধশত কোটি টাকা হতে পারে বলেও মনে করছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এই কর্মকর্তা। বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেঙের উন্নয়নের পাশাপাশি এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়ামটিকে বহুতল বিশিষ্ট একটি আধুনিক জিমনেশিয়ামে পরিণত করা। যেখানে একই ছাদের নিচে সবগুলো ইনডোর ইভেন্টকে খেলানো যাবে। আর আউটার স্টেডিয়ামের উন্নয়নের কাজতো রয়েছেই। যদিও এরই মধ্যে আউটার স্টেডিয়ামের উন্নয়নের প্রাথমিক ধাপ শুরু হয়েছে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উপ পরিচালক আসলাম হোসেন খান জানিয়েছেন, তিনি শীঘ্রই একটি প্রকল্পের খসড়া তৈরি করবেন। পরে সেটা চূড়ান্ত করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে প্রেরণ করা হবে। তিনি বলেন, আমরা এবার চেষ্টা করব চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য বড় কিছু করতে। যাতে অন্তত আগামী দশ বছর চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের অবকাঠামোগত উন্নয়নে আর হাত দিতে না হয়। এখন দেখার বিষয় এই প্রকল্প কতটা আলোর মুখ দেখে।