চট্টগ্রামের অর্ধ-শতাধিক গ্রামের কিছু সংখ্যক মানুষ ঈদ উল ফিতর উদযাপন করবে আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ মে)। সাতকানিয়ার মির্জারখীল দরবার শরীফের মুরিদগণ সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে অন্যান্য বছরের মতো এবারও এক দিন আগে ঈদ উল ফিতর উদযাপন করবেন। দরবার শরীফের মুরিদরা সৌদি আরবের সাথে সঙ্গতি রেখে একদিন আগে থেকে রোজা পালন শুরু করেছিলেন। সেই অনুযায়ী আগামীকাল বুধবার তাদের ত্রিশটি রোজা পূর্ণ হবে।
অন্যান্য বছর চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দরবার শরীফের মুরিদরা ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য দরবার শরীফে চলে আসতেন কিন্তু করোনার কারণে এবারে বাইরের মুরিদদেরকে নিজ নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য বলা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে তাদেরকে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য দরবার শরীফে আসতে নিষেধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মির্জারখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও দরবার শরীফের মুরিদ বজলুল করিম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দরবার শরীফের মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। দরবার শরীফের পীর হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আরেফুল হাই এর বড় ছেলে মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ মকছুদুর রহমান ঈদের নামাজ পড়াবেন বলে জানা গেছে।
মির্জারখীল দরবার শরীফ সূত্র মতে, সাতকানিয়ার মির্জারখীল, এওচিয়ার গাটিয়াডেঙ্গা, মাদার্শা, খাগরিয়ার মৈশামুড়া, পুরানগড়, চরতির সুইপুরা, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, কানাই মাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, দোহাজারী, জামিরজুরি, বাঁশখালীর কালিপুর, চাম্বল, শেখেরখীল, ছনুয়া, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, লোহাগাড়ার পুটিবিলা, কলাউজান, বড়হাতিয়া, এবং পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, সন্দ্বীপ, রাউজান ও ফটিকছড়ির কয়েকটি গ্রামসহ চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামের কিছু সংখ্যক মানুষ আগামী বৃহস্পতিবার ঈদ উল ফিতর উদযাপন করবেন।
এছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যাংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার কয়েকটি গ্রামে থাকা মির্জারখীল দরবার শরীফের মুরিদরাও আগামী বৃহস্পতিবার ঈদ উদযাপন করবেন।
মির্জারখীল দরবার শরীফের মুরিদ ও মির্জারখীল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বজলুল করিম চৌধুরী বলেন, “আমাদের পুরো গ্রামের মানুষ আগামী বৃহস্পতিবার ঈদ উল ফিতর উদযাপন করবে। মির্জারখীল সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রামে থাকা দরবার শরীফের মুরিদরাও একই সময়ে ঈদ পালন করবে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা মির্জারখীল দরবার শরীফের মুরিদরা একই সময়ে ঈদ পালন করবে। মির্জারখীল দরবার শরীফের সকল মুরিদ সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে একদিন আগে থেকে রোজা পালন শুরু করেছিল। দরবার শরীফের অনুসারীরা দুই শত বছরের অধিক সময় ধরে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা পালন ও ঈদ উদযাপন করে আসছে।”
তিনি আরো জানান, অন্যান্য বছর মির্জারখীল ছাড়াও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা অনেক মুরিদ ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য দরবার শরীফে চলে আসত কিন্তু করোনার কারণে এবার তাদেরকে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য দরবার শরীফে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। করোনার বিষয়টি মাথায় রেখে সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ পড়ার জন্য বলে দেয়া হয়েছে।