প্রায় এক যুগ পর পাঁচ ছাত্রলীগ নেতার আজীবন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)। শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সিন্ডিকেট সভায় শর্ত সাপেক্ষে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
সিদ্ধান্তের তথ্য নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ আজাদীকে বলেন, মূলত তিনটি শর্তে তাদের বহিরাষ্কাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ওদের লিখিত আবেদন করতে হবে। পরে সশরীরে এসে শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আর তারা যদি স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) শেষ করতে চায়, তবে তাদের নতুন করে মাস্টার্সে ভর্তি হতে হবে।
ছাত্রলীগের এই ৫ নেতা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২০১০ সালের আহ্বায়ক কমল কান্তি মজুমদার, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মোমেন, সুব্রত দে, সদস্য আবু হাসান লাভলু ও শাহাদাত হোসেন শুভ। ওই সময় তারা সবাই স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ছিলেন। কমল বর্তমানে কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সদস্য, মোমেন ও লাভলু বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। শুভ চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কিউরেটর এবং সুব্রত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
২০০৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও প্রশাসন মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়ায়। অনুষ্ঠান আয়োজনে বাধা পেয়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা উপাচার্যের ‘দুর্নীতি’ নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এতে ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ৪ ডিসেম্বর একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঁচ ছাত্রলীগ নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। ওই সময় সিভাসুর উপাচার্য ছিলেন প্রফেসর নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ।
বহিষ্কারাদেশের প্রায় ১২ বছর পর অক্টোবরের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ৫৯তম সভায় পাঁচ ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, একাডেমিক কাউন্সিলের অধিকাংশ সদস্য ৫ ছাত্রলীগ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিপক্ষে ছিলেন। তবে রুলিং দিয়ে বিষয়টি সিন্ডিকেটে পাঠান উপাচার্য। ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় শেষ পর্যন্ত শর্ত সাপেক্ষে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও সিন্ডিকেটের দুজন মেম্বার এ বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন বলে জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ।