কুমিল্লার ঘটনায় বিএনপি-জামাতের ইন্ধন ছিল : তথ্যমন্ত্রী

ফখরুলের বক্তব্যে মানুষ হাসে, হনুমানও হাসে

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২১ at ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের বক্তব্যে দেশের মানুষও হাসে, হনুমানও হাসে। সরকার নাকি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তিনি এমন বক্তব্য রেখেছেন। তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় কুমিল্লার ঘটনার পেছনে তাদের ইন্ধন ছিল।
গতকাল শনিবার বিকালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশ চালায়, সরকার সবসময় চায় দেশে শান্তি শৃঙ্খলা স্থিতি থাকুক। এই কথার মধ্য দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কি বাংলাদেশের সব মানুষকে বোকা ভেবেছেন? তিনি মনে করেছেন এই কথা বলে মানুষকে বোকা বানাবেন। এটিতে দেশের মানুষ যেমন হাসছে, হনুমানও হাসে। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নুরুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শিমুল গুপ্তের সঞ্চালনায় সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন তপু। প্রধান বক্তা ছিলেন উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি-জামাত রাজনৈতিকভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে এখন নানা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটিয়ে সারা দেশে সামপ্রদায়িক উস্কানি দেওয়া হয়েছে, এটির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। এটির পেছনে বিএনপি-জামাতসহ ধর্মান্ধ গোষ্ঠী যুক্ত। তারা এই ঘটনা ঘটিয়ে সারা দেশে সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি নষ্ট করে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সেই বিশৃঙ্খলা কঠোর হস্তে দমন করেছে।
তিনি বলেন, আজকে সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কুমিল্লার ঘটনায় কারা মিছিল বের করেছে, সেই ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে। তারা কোন দলের সমর্থক, কোন মতাদর্শে বিশ্বাস করে সেগুলো বের করে জনসমক্ষে আমরা সেটা প্রকাশ করব ইনশাআল্লাহ। আমাদের এই দেশে শান্তি শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনোভাবেই বিনষ্ট হতে দেব না।
তিনি আরো বলেন, যারা এই বিশৃঙ্খলার সাথে যুক্ত ছিল, এখনো যুক্ত আছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা অপপ্রচার চালিয়েছে কিংবা চালাচ্ছে, সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারা সেখানে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা অতি সহসা দিবালোকের মতো পরিষ্কার হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে পাকিস্তান দীর্ঘশ্বাস ফেলে। তাদের প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করে বলেন, মানব উন্নয়ন, সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ সব সূচকে আজকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। মানব উন্নয়ন, সামাজিক সূচকসহ মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে আমরা ভারতকেও পেছনে ফেলেছি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই উন্নয়নের প্রশংসায় বিশ্ব পঞ্চমুখ। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা আগেই অর্জন করার জন্য জাতিসংঘ আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে পুরস্কৃত করে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ প্রশংসা করে, এটি অনেকের পছন্দ হয় না।
ছাত্রলীগ নেতা বিনির্মাণের কারখানা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে এবং পড়ালেখায় মনোনিবেশ করার জন্য নেতাকর্মীদের হাতে বই খাতা এবং কলম তুলে দিয়েছিলেন। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে তিনি সবসময় অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। ছাত্রলীগ করার পাশাপাশি লেখাপড়ায় যেন সবাই মনোযোগী থাকে। ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে যেন লেখাপড়ার ক্ষতি না হয় তিনি সবসময় সেই পরামর্শ দেন।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সবসময় সতর্ক দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়। ছাত্রলীগের তরুণ ভাইবোনদের বিনয়ী হতে হবে। কারণ উদ্যত আচরণ কেউ পছন্দ করে না।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদার, আবুল কাশেম চিশতী, শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, ডা. মোহাম্মদ সেলিম, আকতার হোসেন খান, শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, গিয়াস উদ্দিন খান স্বপন, যুবলীগের সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার আরজু, বদিউল খায়ের লিটন চৌধুরী প্রমুখ।
সম্মেলনে সভাপতি পদে ২৩ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ২৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। দ্বিতীয় অধিবেশনে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। তবে এদিন নতুন সভাপতি-সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৪০ ইউনিয়নের নামের তালিকা কেন্দ্রে যাচ্ছে কাল
পরবর্তী নিবন্ধআত্মহত্যায় প্ররোচনা, স্বামী গ্রেপ্তার