এই প্রথম মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে সৌরবিদ্যুৎ পাঠালেন বিজ্ঞানীরা

| মঙ্গলবার , ৬ জুন, ২০২৩ at ৫:২১ পূর্বাহ্ণ

ধারণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি প্রথম নকশার ৫৫ বছর পর প্রথম সফল পরীক্ষা চালিয়ে মহাকাশ থেকে উৎপাদিত সৌরবিদ্যুৎ পৃথিবীতে সংগ্রহ করেছেন বিজ্ঞানীরা। ১৯৬৮ সালে সৌরশক্তিচালিত স্যাটেলাইটের প্রথম নকশা বানিয়েছিলেন নাসার প্রকৌশলী পিটার গ্লেসার।

গত বৃহস্পতিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (ক্যালটেক) গবেষক দল ঘোষণা দেয়, তাদের মহাকাশে ভাসমান প্রোটোটাইপ ‘স্পেস সোলার পাওয়ার ডেমোনস্ট্রেটর (এসএসপিডি)’ সূর্যালোক সংগ্রহ করে একে বিদ্যুতে রূপান্তর করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। এর মাধ্যমে ক্যালটেকের ‘প্যাসাডেনা’ ক্যাম্পাসের ছাদে ইনস্টল করা বিভিন্ন মাইক্রোওয়েভ রিসিভারে আলোও জ্বলেছে। খবর বিডিনিউজের।

বৈদ্যুতিক ও চিকিৎসা প্রকৌশল বিষয়ের অধ্যাপক এবং ক্যালটেকের স্পেস সোলার পাওয়ার প্রজেক্টের (এসএসপি) সহপরিচালক আলি হাজিমিরি এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, আমাদের জানামতে, কেউ কখনও মহাকাশ থেকে তারহীন শক্তি স্থানান্তরের বিষয়টি দেখাতে পারেনি, এমনকি বিভিন্ন খরুচে প্রকল্পেও। নিজেদের সমন্বয় করা সার্কিট ও নমনীয় হালকা ওজনের কাঠামো ব্যবহার করে আমরা এই কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আর এটিই প্রথম এমন ঘটনা।

মাইক্রোওয়েভ অ্যারে ফর পাওয়ার ট্রান্সফার লো অরবিট এঙপেরিমেন্ট’ বা সংক্ষেপে ‘মেপল’ নামে পরিচিত এই পরীক্ষা এসএসপিডি১ প্রোটোটাইপের মাধ্যমে পরিচালিত তিনটি গবেষণা প্রকল্পের একটি। দলটি আরও জানায়, এই ট্রান্সমিশন সেটআপ এমনভাবে নকশা করা যাতে মহাকাশে প্রোটোটাইপ পাঠানোর সময় প্রয়োজনীয় জ্বালানির পরিমাণ কমিয়ে আনা যায়। আর এই নকশাও যথেষ্ট নমনীয় হওয়া প্রয়োজন যাতে এর বিভিন্ন ট্রান্সমিটার সহজেই কোনো রকেটে ভাঁজ করে আঁটানো যায়।

দীর্ঘদিন ধরেই মহাকাশভিত্তিক সৌরশক্তি নিয়ে বৈজ্ঞানিক মহলে আগ্রহ দেখা গেছে। বিদ্যমান রূপে এটি খরচসাপেক্ষ হলেও সীমাহীন নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে এই প্রযুক্তিতে, যেখানে মহাকাশে থাকা বিভিন্ন সৌরপ্যানেল দিনের যে কোনো সময় সূর্যালোক সংগ্রহ করতে পারে। জাপানভিত্তিক সংবাদপত্র নিক্কেই বলছে, বেতারতরঙ্গ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ পাঠানোর মানে, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এতে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি করবে না।

ক্যালটেকের স্পেস সোলার পাওয়ার প্রজেক্ট (এসএসএসপি) বাদে আরও বেশ কয়েকটি দল মহাকাশভিত্তিক সৌরশক্তি আহরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। ক্যালটেকের ঘোষণার কয়েকদিন আগেই জাপানের মহাকাশ সংস্থা ‘জাঙা’ ২০২৫ সালের মধ্যে মহাকাশ থেকে সৌরশক্তি পাঠানোর লক্ষ্যে এক ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে। প্রকল্পটির নেতৃত্বে আছেন জাপানের কিয়োটো ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক, যিনি ২০০৯ সাল থেকেই মহাকাশভিত্তিক সৌরশক্তি নিয়ে কাজ করছেন।

প্রায় এক দশক আগে ২০১৫ সালে এক দশমিক আট কিলোওয়াট বৈদ্যুতিক শক্তি স্থানান্তর করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল জাপান। ওই পরিমান বিদ্যুৎ একটি বৈদ্যুতিক কেটলি চালানোর জন্য যথেষ্ট এবং তারা সেটি তারবিহীন উপায়ে পাঠিয়েছিলেন ৫০ মিটারের বেশি দূরত্বে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদেশে সম্পদের খোঁজ পেলে জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধক্যাম্পে রোহিঙ্গা যুবককে গুলি করে হত্যা