শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘অতিরিক্ত ছুটির কারণে’ সিলেবাস শেষ করতে না পারায় পিছিয়ে গেল অর্ধবার্ষিক মূল্যায়ন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক ষান্মাসিক (অর্ধবার্ষিক) সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৭ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত, যদিও এটি মে মাসের শেষে শুরুর পরিকল্পনা ছিল।
গতকাল বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক–২) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী স্বাক্ষরিত আদেশে নতুন এই তারিখ জানানো হয়। আদেশে বলা হয়, ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন, শৈত্যপ্রবাহ, রোজা ও ঈদ এবং দাবদাহের কারণে শ্রেণিকার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে। আবার জুন মাসের মাঝামাঝি ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি থাকায় মূল্যায়ন ৭ জুলাই থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, আমরা ২২ মে পরীক্ষা শুরুর ব্যাপারে তারিখ দিয়েছিলাম। কিন্তু স্কুলগুলো সিলেবাস শেষ করতে পারেনি, আবার কোরবানির ঈদের ছুটি শুরু হয়ে যাবে। এসব কারণে তারা তারিখ পেছাতে বলল। অর্ধবার্ষিকে পিছিয়ে পড়ায় বার্ষিক মূল্যায়নে কী প্রভাব পড়বে–এই প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার তো মনে হয়, ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা মূল্যায়ন শেষ করতে পারব। কোনো সমস্যা হবে না।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রমে রূপরেখা–২০২১ অনুযায়ী, শিক্ষাবর্ষের ছয় মাসে একটি সামষ্টিক মূল্যায়ন এবং বার মাসে আরেকটি সামষ্টিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সে অনুযায়ী জুন মাসের শেষার্ধে বা জুলাই মাসের প্রথমার্ধে ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন শেষ করা প্রয়োজন। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্যেণির এই সামষ্টিক মূল্যায়ন ১০টি বিষয়ে হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক–প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকছে না। তাদের শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন করা হবে। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ৬০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং ৪০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। বাকি বিষয়গুলোতে শিখনকালীন শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে। এই শ্রেণিগুলোতে ষান্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষার মাধ্যমে হবে সামষ্টিক মূল্যায়ন। নবম ও দশম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ৫০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বাকি ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে। দশম শ্রেণি শেষে দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির উপর পাবলিক পরীক্ষা হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে একজন শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন নম্বর বা গ্রেডের পরিবর্তে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ও বৃত্ত ব্যবহার করে করা হবে। ত্রিভুজ হচ্ছে সবচেয়ে ভালো, বৃত্ত হচ্ছে মোটামুটি ভালো এবং চতুর্ভুজ অর্থ উন্নতি প্রয়োজন।