নির্বাচনে বাধা হলে মিলবে না মার্কিন ভিসা

বাংলাদেশের জন্য নতুন নীতি

আজাদী অনলাইন | বৃহস্পতিবার , ২৫ মে, ২০২৩ at ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি গ্রহণ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার দেড় বছর পর ভিসা নিয়ে ওয়াশিংটনের নতুন নীতির ঘোষণা এলো।

নতুন নীতির অধীনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা বন্ধ হয়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন বুধবার এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দিয়ে দাবি করেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের স্বার্থেই তাদের এই পদক্ষেপ।

বিবৃতিতে ব্লিংকেন বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে যারা এগিয়ে নিতে চায়, তাদের সবাইকে সমর্থন দিতে এই নীতি ঘোষণা করেছেন তিনি।

তার ভাষ্যে, “এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে।”

এর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা বা কর্মচারী, সরকার সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার মধ্যে কোন কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে, তা তুলে ধরে ব্লিংকেন বলেন, “গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কাজের মধ্যে রয়েছে: ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হবার স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেওয়া এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা।”

ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ধারা ২১২ (এ)(৩)(সি) এর অধীনে নতুন এই ভিসা নীতি ঘোষণা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এই সিদ্ধান্তের কথা যুক্তরাষ্ট্র সরকার গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেন ব্লিংকেন।

এদিকে, ব্লিংকেনের এমন ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে সরকার ‘বিচলিত নয়’।

বুধবার রাতে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, “এটা কোনো নিষেধাজ্ঞা নয়। এতে সরকার বিচলিত নয়, যেহেতু আমরা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

শাহরিয়ার পাল্টা বলেন, “বিএনপিকে দুশ্চিন্তা করা উচিৎ, কেননা নির্বাচনের আগে বা পরে সংঘাত রয়েছে ভিসা বিধি-নিষেধের আরেকটি মানদণ্ড হিসাবে।”

বছর শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পদক্ষেপ এলো।

এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এলিট ফোর্স র‌্যাব এবং এর সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার।

ওই সময়ে র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও তৎকালীন আইজিপি বেনজীর আহমদের সঙ্গে কক্সবাজারে র‌্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক মিফতা উদ্দিন আহমেদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল দেশটি।

অবশ্য নিজের মেয়াদের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিয়ে ২০২২ সালের আগস্টে জাতিসংঘের পুলিশ প্রধান সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন বেনজীর।

জাতিসংঘের কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার ক্ষেত্রে ‘রীতি অনুযায়ী’ যুক্তরাষ্ট্র অনেক সময় ভিসা নিষেধাজ্ঞায় ছাড় দিয়ে থাকে বলে সেই সময় জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাতীয় গ্রিডে ৩০ মেগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ ২-৩ দিনের মধ্যে
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা