আগামী বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা মহামারীর আগের মতো যথাক্রমে ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে শুরু করার আশা প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিন আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও কলেজে কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
দীপু মনি বলেন, “আগামী বছর আমাদের চেষ্টা থাকবে এ পরীক্ষাটা এপ্রিলে নেওয়ার। কিন্তু এটা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। এবারও আমরা চেয়েছিলাম আরও আগে পরীক্ষাটা নিতে। এরপরও সেটাকে আগস্টে আনতে হয়েছে। তবে চেষ্টা থাকবে, এসএসসিও ফেব্রুয়ারিতে নেওয়া হবে।”
দেশে ২০১০ সাল থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এসএসসি এবং এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে আসছিল।
২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষা সময়মতো নেওয়া গেলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়েই শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়া হয়।
শিক্ষাসূচি ভেঙে পড়ায় ২০২১ ও ২০২২ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। এর সঙ্গে বন্যার ধাক্কায় ২০২২ সালে পরীক্ষা আরও পিছিয়ে নভেম্বরে শুরু হয়।
এ বছর পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে জুলাইয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত হলেও তা পিছিয়ে যায় সিলেবাস শেষ না হওয়ার কারণে।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে একযোগে এ পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু চট্টগ্রাম বিভাগে প্রবল বর্ষণ ও বন্যার কারণে চট্টগ্রাম, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা ১০ দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ঢাকা, কুমিল্লা, সিলেট, ময়মনসিংহ, বরিশাল, যশোর, রাজশাহী ও দিনাজপুর বোর্ডের পরীক্ষা।
শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এবারও ৬০ দিনের মধ্যেই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। পরীক্ষা আলাদা হলেও চেষ্টা থাকবে একসঙ্গে সব বোর্ডের ফল প্রকাশ করার।
তিনি বলে, “আমাদের রেজাল্ট ৬০ দিনের মধ্যেই হবে ইনশাল্লাহ। যাদেরটা আগে হচ্ছে, তাদেরটা ৬০ দিনের মধ্যেই হবে, অন্যদেরটাও ৬০ দিনের মধ্যে করার চেষ্টা করব। কিন্তু যদি কোনো সমস্যা থাকে…, কিন্তু সবারটাই ৬০ দিনের মধ্যে হবে ইনশাল্লাহ।”
প্রশ্ন ফাঁসের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঘটবে না, এমন আশা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, “প্রত্যেকবারই নতুন সমস্যা এসে হাজির হয়। আমরা সেগুলোর ব্যবস্থা নিই। এবার আশা করি নতুন কোনো সমস্যা হবে না, পুরাতন সমস্যাগুলো আসবে না। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না আশা করি আমরা। সেজন্য সব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারপরও আমাদের চোখ কান খোলা থাকতে হবে।”
ডেঙ্গুর উদ্বেগের মধ্যে শিক্ষার্থীদের এ বছর পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। তবে অসুস্থ পরীক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন দীপু মনি।
পরীক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ দিতে কেন্দ্রের সামনে জড়ো না হয়ে অভিভাবকদের দূরে অবস্থান করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন। যাদের ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৭ জন ছাত্র ও ৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৫ জন ছাত্রী।
এর মধ্যে ৮ শিক্ষা বোর্ডে বৃহস্পতিবার পরীক্ষা দেওয়ার কথা ১০ লাখ ৭ হাজার ২৪১ জন পরীক্ষার্থীর।
তাদের মধ্যে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৮৯৮ জন বিজ্ঞান বিভাগের, ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৫৬৬ জন মানবিকের এবং ১ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৭ জন ব্যবসায় শিক্ষার।
