লোহাগাড়ায় মুক্তিপণ নিতে এসে অপহরণকারী গ্রেপ্তার

কোরআন খতমের টাকা দান করার কথা বলে মাজারের খাদেমকে অপহরণ

লোহাগাড়া প্রতিনিধি | রবিবার , ২৪ এপ্রিল, ২০২২ at ৮:৩৯ অপরাহ্ণ

লোহাগাড়ায় কোরআন খতমের জন্য কিছু টাকা দান করবে বলে নিয়ে গিয়ে পশ্চিম কলাউজান মান্নান মিয়াজী গায়েবী কোরআন মাজার শরীফের এক খাদেমকে অপহরণ করা হয়।

অপহৃত খাদেমের নাম মো. নুরুল আলম (৫৮)। তিনি উপজেলার কলাউজান ইউনিয়নের পশ্চিম কলাউজান মান্নান মিয়াজী বাড়ির মৃত গুরা মিয়ার পুত্র।

মুক্তিপণের দাবিকৃত টাকা নিতে এসে অপহরণের ১০ ঘণ্টার মধ্যে অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার ও ভিকটিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার অপহরণকারী মো. রাজা মিয়া (২৮) উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাইয়ার পাড়ার আবদুল আলমের পুত্র।

ঘটনার সাথে জড়িত আকতার হোসেন (৪০) নামের আরেকজন পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। তিনি লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের সওদাগর পাড়ার আবুল হোসেনের পুত্র।

পুলিশ জানায়, মাজারে আসা-যাওয়া করার সুবাধে অপহরণকারীদের মধ্যে আকতার হোসেনের সাথে ভিকটিমের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সুবাদে গত ২২ এপ্রিল দুপুরে ভিকটিমকে মোবাইল ফোনে চরম্বা ইউনিয়নের কালোয়ার পাড়ায় তার দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়ির লোকজন মাজারে কোরআন খতম করার জন্য কিছু টাকা দান করবে বলে জানান আকতার। টাকা নেয়ার জন্য ইউনিয়নের নাফারটিলা বাজারে যেতে বলেন ভিকটিমকে। অপহরণকারী পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ভিকটিম সরল বিশ্বাসে একই দিন বিকেলে সেখানে যান। এরপর অপহরণকারী আকতার হোসেন মোটরসাইকেল যোগে ভিকটিমকে চরম্বা ইউনিয়নের কালোয়ার পাড়ায় এক অপরিচিত লোকের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে ইফতার করার পর কোরআন খতমের টাকা দেয়ার কথা বলে দুই অপহরকারী ভিকটিমকে মোটরসাইকেলের মাঝখানে বসিয়ে ইচ্ছের বিরুদ্ধে গহীন পাহাড়ে নিয়ে যান।

এরপর ২৩ এপ্রিল রাত ১টার দিকে অপহরণকারীরা জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ভিকটিমের স্ত্রীর মোবাইল ফোন করে বিকাশে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেন ভিকটিমের স্ত্রী।

পুলিশের পরামর্শ মতে ভিকটিমের স্ত্রী এতো রাতে বিকাশের দোকান কোথায় পাবো বলে জানিয়ে সরাসরি এসে অপরহরণকারীকে মুক্তিপণের টাকা নিতে বলেন।

এতে অপহরণকারীরা রাজী হয়ে মুক্তিপণের টাকা নিতে ভিকটিমকে সাথে নিয়ে লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের কাজির পুকুর পাড় এলাকায় আসার কথা বলেন।

ভোররাতে ঘটনাস্থলে আসলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার ও অপহরণকারীর একজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলেও অন্যজন কৌশলে পালিয়ে যায়।

তারপর গ্রেপ্তার অপহরণকারী মো. রাজা মিয়ার তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, ভিকটিমের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দুই অপহরণকারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অপহরণকারীকে আজ রবিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

পলাতক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনার ব্যাপারে ব্যাপক তদন্ত চলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় ‘খালের পানি খেয়ে’ ১৩ মহিষের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ায় ছোট ভাইকে হত্যার অভিযোগে বড় ভাই-ভাবী গ্রেপ্তার