এখন না সরলে পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না

খুলনায় সরকারকে ফখরুল

আজাদী অনলাইন | শনিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২২ at ৮:২৯ অপরাহ্ণ

সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “এখনও সময় আছে, নিরাপদে সরে যান। না হয় পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে দেশে আওয়ামী লীগের চিহ্নও থাকবে না। ১০টার বেশি আসন পাবে না। গণঅভ্যুত্থানে এ সরকারকে বিদায় জানাতে হবে। আমাদের দেশকে গণতন্ত্রের পথে ফেরাতে চাই। ফয়সালা হবে রাজপথে।”

টান টান উত্তেজনার মধ্যে আজ শনিবার (২২ অক্টোবর) খুলনা নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে অনুষ্ঠিত বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহাসচিব এসব কথা বলেন।

নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে অনুষ্ঠিত খুলনার বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগকে অবিলম্বে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

খালেদা জিয়ার মুক্তি, জ্বালানি তেল, চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা এবং মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সারাদেশে বিভাগীয় গণসমাবেশের ধারাবাহিকতায় খুলনার এই সমাবেশ করে বিএনপি কিন্তু গণসমাবেশের আগের দিন থেকেই খুলনায় বাস, লঞ্চ, ফেরি, নৌকা-ট্রলার পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আশপাশের জেলাগুলো থেকে সব জায়গায় গাড়ি চলাচল করলেও ‘ধর্মঘটের নামে’ শুক্রবার থেকে শুধু খুলনার পথের বাস বন্ধ ছিল। এতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে চাকরিপ্রার্থীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। খুলনায় ঢোকার সড়কে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করলেও তাতে বাধা দেওয়া হয়েছে। খুলনাকে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়।

এর মধ্যেই ট্রেনে, মোটরসাইকেলে, অটোরিকশায়, হেঁটে লোকজনকে সমাবেশে যোগ দিতে দেখা যায়। অনেক নেতাকর্মী আবার সমাবেশকে কেন্দ্র করে এক-দুদিন আগেই খুলনায় গিয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি বা হোটেল-মেসে উঠেন। সকাল ৯টার পর থেকেই গণসমাবেশমুখী নেতাকর্মীদের ঢল নামে।

সমাবেশ দুপুর ২টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তিন ঘণ্টা আগে বেলা ১১টায় জাতীয় ও দলীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে যায়। সমাবেশ মঞ্চে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য একটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়। তার বাম পাশের চেয়ারে আসন নেন বিএনপির মহাসচিব।

খুলনা জেলা ও বিভাগীয় নেতাদের বক্তব্যের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। সবশেষ চেয়ারে বসেই বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব।

বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সমাবেশে অংশ নেওয়ায় শুরুতেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খুলনাবাসীকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি জনতার মিছিল দেখিয়ে সরকারের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা দমিয়ে রাখতে পারবেন না। নতুন সাহস নিয়ে আন্দোলন করছে বিএনপি। বিএনপি নতুন সাহসে বলীয়ান, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।”

মামলা-হামলা করে বিএনপিকে দমানো যাবে না-এমন মন্তব্য করে দলের মহাসচিব বলেন, “আমাদের বয়স হয়েছে তারপরও লড়াই করছি। মূল দায়িত্ব তরুণদের ওপর, লড়াইয়ে জিততে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি, সহিসংসতা করছি না। আমাদের ওপর হামলা করে পার পাবেন না। বিদেশিরা বুঝে গেছে, আপনারা সন্ত্রাসের দল। হামলা করে ক্ষমতায় টিকে আছেন।”

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “সরকার বলছে, দুর্ভিক্ষের পদধ্বনির কথা কারণ তারা লুটপাট করছে। দেশকে নরকে পরিণত করেছে সরকার। সব অর্জন ধ্বংস করে ফেলেছে। অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে এসব করছে সরকার। একবার ভোট ছাড়া, আরেকবার নিশি রাতে। ২০২৩ সালে নির্বাচন একইভাবে করার পাঁয়তারা করছে।”

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “এই নির্বাচন কমিশন নিজেদের ভালো দেখানোর জন্য কৌশল নিয়েছে। কমিশনকে তো ডিসি-এসপিই মানেন না। তাই আমরা নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলছি না। তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। তাই এই সরকারকে বিদায় জানাতে হবে।”

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমাদের সামনে আন্দোলন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এই সরকারকে পরাজিত করে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকার পদত্যাগ করুক।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে অটোরিকশা উল্টে নিহত ১, আহত দুই
পরবর্তী নিবন্ধনারায়ণগঞ্জ থেকে টিসিবি’র চুরি যাওয়া তেল উদ্ধার ফটিকছড়িতে