ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১৪ জুলাই, ২০২২ at ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ

টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিধ্বস্ত হওয়া বাংলাদেশ দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ওয়ানডে সিরিজে।

টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিজেরা উড়ে গেলেও ওয়ানডে সিরিজে ক্যারিবীয়দের উড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা।

আজ রাতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করেছে তামিম ইকবালের দল। এটি তামিমের নেতৃত্বে ষষ্ট দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয়। পাশাপাশি টানা পঞ্চম ওয়ানডে সিরিজ জয়।

এগুলোর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুইবার এবং শ্রীলংকা, জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে পেসাররা কিছুটা ভূমিকা রাখলেও গতকাল বাংলাদেশের স্পিনারদের ঘুর্নিতে কাবু হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মিরাজ, নাসুমের সাথে মোসাদ্দেকের ঘুর্নির সামনে পড়ে দাড়াতেই পারেনি স্বাগতিকরা। বল হাতে স্পিনাররা যে মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিল তাতে দাড়িয়ে বাকি কাজটা একেবারে নিপুন কারিগরের মত সেরেছে ব্যাটাররা। তামিমের সহজাত নেতৃত্ব দলকে সামনে থেকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন দক্ষতার সাথে। নিজে যেমন পারফর্ম করছেন তেমনি সতীর্থদের কাছ থেকেও বের করে আনছেন সেরাটা। তািতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে জিততে ভুলে যাওয়া বাংলাদেশ নিজেদের ফিরে পেয়েছে দুর্দান্তভাবে। এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ নিশ্চিত করা টাইগারদের সামনে লক্ষ্য এখন স্বাগতিকদের হোয়াইট ওয়াশ করা। মিরাজ, নাসুমদের দারুন বোলিং এর পর তামিম, লিটনদের দায়িত্বশীল ব্যাটিং বাংলাদেশ দল ম্যাচ এবং সিরিজ দুটোই নিশ্চিত করেছে।

টসে জিতে এই ম্যাচেও প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাট করার আমন্ত্রন জানায় বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা প্রমানে বেশি সময় নেননি মোসাদ্দক হোসেন। তিনি বোল্ড করে ফেরান কাইল মায়ার্সকে। যদিও আরো আগেই ফিরতে পারতেন তিনি। মিরাজের বলে সোহান স্টাম্পিং মিস করলে সে যাত্রায় বেঁচে যান মায়ার্স। তিন ওভার পর এবার নাসুমের আঘাত। তার শিকার ক্রুক। ৫ রান করে ফিরেছেন তিনি। তবে স্বাগতিক শিবিরে সবচাইতে বড় ধাক্কাটা দেন সেই নাসুমই। ১৮ তম ওবারের চতুর্থ এবং ষস্ট বলে শাই হোপ এবং অধিনায়ক নিকোলাস পুরানকে ফেরান নাসুম। হোপ ১৮ রান করলেও রানের খাতা খুরতে পারেনি পুরান। রবম্যান পাওয়েলকেও ভয়ংকর হতে দেননি শরীফুল। অপয়া ১৩ তে ফিরেছেন এই হার্ড হিটার। পরের ওভারে ব্রেন্ডন কিং এর স্টাম্প উপড়ে ফেলেন মিরাজ। ৭২ রানে ৬ উইকেট নেই ক্যারিবীয়দের। এরপর বলতে গেলে কেমো পল প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু স্বাগতিকদের লেজ ছেটে দিতে মোটেও সময় নেননি মিরাজ। মুলত তার ঘুর্নিতে দাড়াতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষের দিকের ব্যাটাররা। ফলে ১০৮ রানে অল আউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একপ্রান্ত আগলে রাখা কিমো পল অপরাজিত ছিলেন ২৪ বল ২৫ রান করে। মিরাজ নিয়েছেন ২৯ রানে ৪ উইকেট। প্রথম ম্যাচে তিন উইকেট নিয়েছিলেন এই স্পিনার। শুরুতে স্বাগতিকদের কোমর ভেঙে দেওয়া নাসুম নিয়েছেন ১৯ রানে তিন উইকেট।

১০৯ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে শুরুটা দারুন করেছিল তামিম ইকবাল। ৪৮ রান করে বিচ্ছিন্ন হন দুজন। ৩৬ বলে ২০ রান করে ফিরেন শান্ত। এরপর লিটন দাশকে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি তামিম ইকবালকে। ব্যাট হাতে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দারুন এক জয় তুলে নিলেন তামিম। মোটির বলে চার মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি নিজের হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন। ৬২ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন তামিম। আর লিটন দাশ অপরাজিত ছিলেন ২৭ বলে ৬ চারের সাহায্যে ৩২ রান করে। এই দু’জনের অবিচ্ছিন্ন জুটিটা ছিল ৬২ রানের। ১৭৬ বল এবং ৯ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ এবং সিরিজ জয়ের আনন্দে মাতে বাংলাদেশ। ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠে ৩ উইকেট নেওয়া নাসুম আহমেদের হাতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনানার বাড়িতে বেড়াতে এসে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধনগরীতে গৃহবধূ সহ দুইজনের আত্মহত্যা