বঙ্গোপসাগরে বিরল জলস্তম্ভ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২২ at ১০:১৭ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বঙ্গোপসাগরে আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে দেখা মিললো বিরল জলস্তম্ভ বা ওয়াটারস্পাউট।

স্থলভাগের মতো জলরাশিতে যখন টর্নেডো হয় তখন ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘূর্ণায়মান বায়ুর টানে নলাকৃতি নিয়ে পানি মেঘের দিকে উঠতে থাকে। বিষয়টি অনেকটা হাতির শুঁড়ের মতো দেখায়। এটিকে আবহাওয়াবিদরা বলেন ‘ওয়াটারস্পাউট’ বা জলস্তম্ভ।

এমন দৃশ্যকে কিছুটা বিরল বলা হলেও স্বল্পস্থায়ী ঘটনাটিকে খুবই বিপজ্জনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন আবহাওয়াবিদরা।

তারা বলেন, ওয়াটারস্পাউট বা জলস্তম্ভের ঘটনা ঘটার সময় সেখানে যা কিছু থাকে তাই ধ্বংস হয়ে যায়। জাহাজ থাকলে আস্ত জাহাজ ডুবিয়ে দেয়া বা ছোট নৌযান থাকলে তা উপরে তুলে ফেলার মতো শক্তি তৈরি হয় পানি এবং বাতাসে। ওয়াটার স্পাউট যেখানে সংঘটিত হয় সেখানে পানি এবং বাতাস একই সাথে প্রচন্ড বেগে ঘূর্ণয়মান হয় এবং পানি উপরে নিয়ে যায়।

আজ বিকেল ৫টা নাগাদ বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ করে জলস্তম্ভ তৈরি হয়। বিভিন্ন জাহাজ এবং লাইটারেজ জাহাজ থেকে এই পিলারের মতো পানি উপরে উঠতে দেখা যায়। সাগরের বুক থেকে আকাশের বেশ উপর পর্যন্ত পানির একটি বড় প্রবাহ তৈরি হয়। এর মাধ্যমে প্রচুর পানি উপরের দিকে উঠতে দেখা যায়। বিভিন্ন জাহাজ থেকে ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করা হয়। ওই সময় বিভিন্ন জাহাজে আতংকও ছড়িয়ে পড়ে। তবে অল্পক্ষণের মধ্যেই জলস্তম্ভ শেষ হয়ে যায়।

ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জলস্তম্ভকে অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করে বলেন, “ভাগ্যক্রমে বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটেনি। বহির্নোঙরে প্রচুর জাহাজ এবং নৌযান চলাচল করে। এগুলোর কোনোটি যদি ওয়াটারস্পাউটে পড়ত তাহলে ধ্বংস হয়ে যেত।”

তিনি বলেন, “ওয়াটারস্পাউট বা জলস্তম্ভ হচ্ছে জল দিয়ে মোড়ানো বাতাসের তৈরি পিলার। টর্নেডোর ফলে এটি সৃষ্টি হয়। স্থলভাগের মতো জলরাশির উপর শক্তিশালী টর্নেডো সৃষ্টি হলে প্রবল বেগে ঘূর্ণায়মান বায়ুর টানে জলভাগের পানি টর্নেডোর কেন্দ্র বরাবর স্তম্ভাকারে ঘুরন্ত অবস্থায় ওপরে উঠতে থাকে। আকাশ কালচে বর্ণ ধারণ করে বিজলী চমকে গর্জন করতে থাকে।”

আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, “জলরাশিতে যেটা দেখা গেছে সেটি মূলত টর্নেডো ছিল। এ ধরনের টর্নেডো অন্তত ১ কিলোমিটারের মতো এলাকা নিয়ে হতে পারে। সর্বোচ্চ ১০ মিনিট পর্যন্ত এটি স্থায়ী হয়। এই স্বল্প সময়ে টর্নেডো সবকিছু ধ্বংস ও লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারে। এর ঘূর্ণায়ন গতি আশেপাশে বিস্তৃত হতে থাকলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারত। এই ধরনের টর্নেডো জাহাজ ডুবিয়ে দেয়া কিংবা নৌকা আকাশে তুলে নেয়ার ঘটনাও ঘটাতে পারে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাদক মামলার আসামির বিরিয়ানির প্যাকেটে গাঁজা
পরবর্তী নিবন্ধটেকনাফে ‘নগদ’ সুপারভাইজার হত্যাকাণ্ডে আটক ২