দেশ বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও চট্টগ্রামের আলোকিত পুরুষ এবং ফটিকছড়ি রত্নগর্ব কৃতি সন্তান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রথিতযশা শিক্ষক, প্রখ্যাত গবেষক ও বিজ্ঞানী, নিবেদিত শিক্ষানুরাগী সর্বোপরি অসাধারণ মেধা ও প্রতিভাবান একজন গুণী ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব ড. শফিকুর রহমান। তিনি ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামের ডাক্তার আজিজুর রহমান সাহেবের জৈষ্ঠ্য পুত্র এবং মাস্টার বাড়ির বড় ছেলে হিসেবে এলাকায় সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি পাকিস্তান আমলে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে দেশের টানে সুদূর ইংল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছেন। তাঁর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই মেধা, প্রতিভা ও কর্ম দক্ষতার সাফল্যের অসাধারণ স্বাক্ষর রেখেছেন। আপাদমস্তকে তিনি সম্পূর্ণ একজন অরাজনৈতিক ও প্রচার বিমুখ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাই দেশের জন্য তাঁর রেখে যাওয়া উল্লেখযোগ্য অনেক অবদানের মূল্যায়ন কিংবা স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি। এমনকি তাঁর নানা গবেষণা কাজে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও কোন সহযোগিতা মেলেনি! তাই তিনি দেশে চাকরি জীবন শেষ করে পেশাগত অবসরকালীন সময়ে নীরবে নিবৃত্তে সুদূর আমেরিকাতে পাড়ি দিয়েছেন। ড. শফিকুর রহমান বাংলাদেশে বর্ণাঢ্য পেশাগত জীবনের শুরুতে সিলেট এমসি কলেজ এবং চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআইসি) সচিব ও বাংলাদেশের কেমিক্যাল অ্যাবস্ট্রাক্টস সার্ভিস‘র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এতে তিনি পেশাগত দক্ষতার সাফল্যের মাঝে খাতনামা রসায়নবিদ ও গবেষণা কর্মে দেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এছাড়াও তিনি একাধারে চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং কাপ্তাই কর্ণফুলী পেপার মিল এর মহাব্যবস্থাপক ছিলেন। উল্লেখ্য যে, তিনি সিইউএফএলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান এবং কর্ণফুলী কাগজ মিলে কয়েক প্রকারের নতুন কাগজ উদ্ভাবন করেছেন। পাশাপাশি তাঁর নিজস্ব স্বনামধন্য সুপ্রাচীন শিল্প প্রতিষ্ঠান আরমান কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং চট্টগ্রামের সুপ্রসিদ্ধ (কলমের দোয়াত কালি) জেমকালির প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। দেশে থাকাকালীন সময়ে তিনি নিজ এলাকায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্নে উদ্যোক্তা হিসেবে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। স্থানীয় আজিমপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ড. শফিকুর রহমান বাংলাদেশে পেশাগত চাকরি জীবনের অবসর গ্রহণ করার পর তাঁর কর্ম সাফল্যের খ্যাতিতে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গমন করেন। সেখানে তিনি লবণের উপর গবেষণা করে সাফল্য অর্জন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিত্ব নিয়ে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন। তাই তাঁর ইন্তেকালের পর যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শেষ দাফন কাফন অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের সহধর্মিণী ফরিদা রহমান চট্টগ্রাম গুলজার বেগম স্কুল এবং আগ্রাবাদ বালিকা বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁর দুই সন্তানও বর্তমানে আমেরিকাতে সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছেন। উল্লেখ্য যে, প্রয়াত গুণীজন ড.শফিকুর রহমান চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, নিবেদিত শিক্ষানুরাগী এবং ফটিকছড়ি আজিমপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের আজীবন দাতা সদস্য ও একাধিকবার নির্বাচিত সভাপতি মরহুম আলহাজ্ব মুজিবুর রহমানের বড় ভাই।












