সংবিধান অনুযায়ী দেশে সংখ্যালঘু বলতে কিছু নেই

জেএমসেন হলে পূজা মণ্ডপে আমীর খসরু

| বুধবার , ১ অক্টোবর, ২০২৫ at ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দুর্গোৎসব শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি এখন দেশের সংস্কৃতিরও অংশ হয়ে গেছে। এ উৎসব যেভাবে বলা হয় সার্বজনীন, আসলে সেটি কেবল সার্বজনীন না। বরং আমাদের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সংবিধান অনুযায়ী দেশে সংখ্যালঘু বলতে কিছু নেই। তিনি গত সোমবার রাতে নগরীর জেএমসেন হলে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং হিন্দু সমপ্রদায়ের মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে ধর্ম বর্ণ জাতি নির্বিশেষে সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সীমানায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সবাই সংবিধান অনুযায়ী সমান নাগরিক। তাই সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই। যদি সংবিধান আপনাকে সমান অধিকার দেয়, তাহলে সংখ্যালঘু ধারণা সাংঘর্ষিক। এটা হতে পারে না। আমাদের সকলকে এটি মাথায় রাখতে হবে।

শৈশবের স্মৃতিচারণ করে আমীর খসরু বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন এত মণ্ডপ ছিল না। মহানগরে সীমিত কিছু মণ্ডপ ছিল। আমার বাড়ি কাট্টলী, সেখান থেকে কৈবল্যধাম ছিল আমাদের কাছের মণ্ডপ। আমরা সেখানে যেতাম এবং বিভিন্ন উৎসবে যোগ দিতাম। তিনি আরও বলেন, আগামীর বাংলাদেশে আমরা সকলে সমানভাবে আমাদের সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করবো। ধর্মীয় অনুষ্ঠান উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে পালন করবো, এটাই আমার অঙ্গীকার। বিভিন্ন ধর্মের উৎসবে সকলে যেন অংশ নিতে পারি, সেই চর্চা গড়ে তুলতে হবে। অতীতের ভুলত্রুটি নিয়ে মাথা ঘামানোর চেয়ে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার দিকে মনোযোগী হতে হবে।

দলের নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেনধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। এটি কোনো পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট নয়, বরং দলের নীতি ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বলা হয়েছে। একইভাবে ‘ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা সবার’ এটিও পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট নয়, বরং নীতি নৈতিকতা থেকে বলা।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পাহাড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা আয়োজন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা যেই অবস্থাতেই থাকি না কেন, কারও নাগরিক অধিকার হরণ করার অধিকার আমাদের নেই। সংবিধান সকলকে সমান অধিকার দিয়েছে, কারো বেশি বা কম নয়। দেশ পরিচালনায় ও দৈনন্দিন জীবনেও এটি মাথায় রাখতে হবে।

এর আগে তিনি শুলকবহর ওয়ার্ডের ২ নম্বর গেইট আদর্শ পাড়া মুরাদপুর মন্দির, লালখান বাজার হাইওয়ে মোড় পূজা মন্ডপ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড হাসপাতালের পাশে লোকসেড গেট পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিখিল কুমার নাথের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট আবদুস সাত্তার, শফিকুর রহমান স্বপন, শাহ আলম, মন্‌জুর আলম চৌধুরী মন্‌জু। উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, জাফর আহমেদ, আশরাফুল ইসলাম, মহানগর মহিলাদলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জমির উদ্দিন নাহিদ, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দে পার্থ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব ধর তমাল, সুমন ঘোষ বাদশা, সুজন দাশ, নটু চৌধুরী, নুর হোসেন উজ্জ্বল, রিফাত হোসেন শাকিল প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপূজা যেন শান্তিপূর্ণ না হয় সেজন্যই খাগড়াছড়ির ঘটনা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধতদন্ত কমিটির কাজ শুরু, কমিটির দুজনকে নিয়ে প্রশ্ন