মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মেয়ে উম্মে হাবিবা রজনী। কিন্তু ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তিনি বাড়ি ফিরেছেন লাশ হয়ে।
গতকাল ভোর ৪টার দিকে হাবিবার লাশ তার বাবার বাড়ি গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের বাওট গ্রামের স্কুল পাড়ায় পৌঁছালে পরিবার–পরিজন ও গ্রামবাসীর আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে আশপাশের পরিবেশ। পরে হাবিবার মরদেহ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাজিপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে সকাল ৯টায় দাফন করা হয় বলে তার স্বামী জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
৩৭ বছর বয়সী উম্মে হাবিবা রজনী মটমুড়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আবদুল হামিদের মেয়ে। তিনি স্বামী জহুরুলের সঙ্গে ঢাকার উত্তরার চার নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় থাকতেন। জহুরুল একটি বেসকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির পাশাপাশি টাইলসের ব্যবসা করেন। তাদের একমাত্র মেয়ে ১২ বছর বয়সী ঝুমঝুম খাতুন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
ঘটনার বর্ণনায় জহুরুল ইসলাম বলেন, বাড়ির রান্না–কাজ শেষ করে মেয়েকে আনতে সোমবার বেলা ১টার দিকে মাইলস্টোন স্কুলের দিকে রওনা হওয়ার সময় হাবিবা বলেছিল, ফিরে একসঙ্গে খাবো। দুপুরে প্রতিদিন আমাদের একসঙ্গে খাওয়া হয়। কালকে দুপুরেও মেয়ে ফিরল, কিন্তু সে ফিরলো না। মেয়েকে নিতে অপেক্ষা করার সময় হঠাৎ একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হলে হাবিবা মারাত্মক দগ্ধ হয়। তাকে ঢাকার সিএমএইচ বার্ন ইউনিটে নেওয়া হলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এখন বাসার ডাইনিং টেবিল আমাদের কাছে হাহাকার।
তিনি বলেন, মেয়ে ঝুমঝুম গুরুতর আহত হলেও সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
উম্মে হাবিবার অকাল মৃত্যুতে তার বাড়ি বাওট গ্রামে শোক নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, রজনী ছিলেন অত্যন্ত স্নেহশীলা ও সদালাপী। তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যু এলাকাবাসীর হৃদয়ে গভীর দাগ কেটেছে।