তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিয়োগের নতুন প্রস্তাবে দলগুলো একমত : আলী রীয়াজ

| সোমবার , ২১ জুলাই, ২০২৫ at ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের সংশোধিত প্রস্তাবের অধিকাংশ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে বলে তুলে ধরেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ। তবে সংশোধিত প্রস্তাবটি কী তা ব্রিফিংয়ে বলেননি তিনি। তিনি বলেন, দলগুলোর প্রতিনিধিরা এখন দলীয় ফোরামে এ নিয়ে আলোচনা করে তাদের চূড়ান্ত মতামত দেবে এবং মঙ্গলবার এ বিষয়ে কমিশন তাদের অবস্থান বা একমত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরবে।

গতকাল রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে পঞ্চদশ দিনের আলোচনায় বসে ঐকমত্য কমিশন। দিনের আলোচনা শেষে ব্রিফিংয়ে আসেন কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়াও বাকি দিনগুলোর সংলাপে আরো কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, জুলাই মাসের মধ্যেই একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা সম্ভব হবে। খবর বিডিনিউজের।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় নির্বাচন করার ব্যবস্থাটি বাতিল করে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমরা সেখানে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছি। প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়ে একটি সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। তারই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন রকম আলোচনার মধ্য দিয়ে কিছু সংশোধন সংযোজনের প্রশ্নটা ওঠে এবং সেই লক্ষ্যেই সেই আলোচনার প্রেক্ষিতেই কমিশন দিনের মাঝামাঝি সময়ে বৈঠক করেছে। সেখানে আরেকটি সংশোধিত সমন্বিত প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। এ প্রস্তাবে বিস্তারিতভাবে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পদ্ধতি বলা হয়েছে। এই প্রস্তাবের অধিকাংশ বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে।

আলী রিয়াজ বলেন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের তিন উপঅনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে। সংশোধিত ভাষ্য হবে ত্রয়োদশ সংশোধনীর বিধান, যা পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়েছে। অর্থাৎ সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় নির্বাচন করার যে ব্যবস্থা ছিল সেটা বাতিল করে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমরা সেখানে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছি।

এদিনের আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, আজ অধিকাংশ সময় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন প্রক্রিয়ার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়টাই আলোচিত হয়েছে। বিভিন্ন রকম প্রস্তাব ছিল। আমরা সর্বশেষ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রস্তাব চেয়েছিলাম। সেই অনুযায়ী চারটি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে আমরা প্রস্তাব পেয়েছিলাম। দলগুলো হলো বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বিএনপি, এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী।

এই চার দলের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এদিন সকালে কমিশনের সংশোধিত প্রস্তাব উপস্থাপনের কথা তুলে ধরে আলী রিয়াজ বলেন, অধিকাংশ দল মনে করেছে, এই সংশোধিত প্রস্তাবের মধ্যে গত কয়েকদিনের আলোচনার বিষয়গুলো প্রতিফলিত হয়েছে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল সেগুলোকে সমন্বিত করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, এই প্রস্তাবের একটি লিখিত ভাষ্য তৈরি করা হয়েছে এবং বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে ওই লিখিত প্রস্তাব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের কাছে দেওয়া হয়েছে। তারা ওই খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে দলগতভাবে আলোচনা করে আগামীকাল (সোমবার) আমাদেরকে মতামত জানাবেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আশা করছি পরশুদিন (মঙ্গলবার) আমরা এ বিষয়ে আমাদের কমিশনের অবস্থান বা একমত হওয়ার জায়গাটা বলতে পারব।

সংসদে উচ্চকক্ষের বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, উচ্চকক্ষের বিষয়ে একাধিক দিন আলোচনা হয়েছে। উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা বিষয়ে কোনো ভিন্নমত নেই। তবে কীভাবে হবে সে বিষয়ে দুটো মত আছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর এই মতামতের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলো কমিশনের কাছে এই দায়িত্ব অর্পণ করেছে। কমিশন ইতিমধ্যে এটা নিয়ে আলোচনা করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদলীয় প্রধানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ উন্মুক্ত থাকার পক্ষে বিএনপি
পরবর্তী নিবন্ধরাজনীতির পথে গোলাপ ছড়ানো থাকে না : ফখরুল