ফেব্রুয়ারিতেই সংসদ নির্বাচন ‘হবে’ বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল রোববার ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না, এরকম কোনো লক্ষণ আমি দেখছি না। শুধু শুধু এটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার দরকার তো নেই। আমি দেখছি নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হচ্ছে। গত শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে সংসদ নির্বাচনে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি উঠার বিষয়ে সাংবাদিকরা আমীর খসরুর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে তিনি বরেন, সারাদেশ নির্বাচনে নেমে পড়েছে, সারাদেশের মানুষ প্রস্তুতি নিচ্ছে ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের জন্য। নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে, তারা তৈরি আছে। যে বিষয়টা হয় নাই, এটাকে শুধু শুধু প্রশ্নবিদ্ধ করে অহেতুক আগামী নির্বাচনকে ব্যাহত করার চেষ্টা করে তো কোনো লাভ নাই। খবর বিডিনিউজের।
খসরু বলেন, আর দ্বিমত তো থাকবেই। যেকোনো প্রেক্ষাপটে দ্বিমত থাকবে। আপনি যখনই যেটা বলবেন, রাজনৈতিক দলের মধ্যে দ্বিমত থাকবে। এটাতে কোনো অসুবিধা নাই। দ্বিমত পোষণ করার সকলের অধিকার আছে।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে কানাডিয়ান হাইকমিশনার অজিত সিং সাক্ষাৎ করার পর ব্রিফিং করেন খসরু। কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু নারীকে ধর্ষণের অভিযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, শুধু এখানে না, সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, অনেক কিছু রিপোর্ট হচ্ছে না। এটার বিরুদ্ধে সরকারকে আরও সক্ষম হতে হবে, আরও তাদের নজরদারি বাড়াতে হবে। তার দাবি, এই সব ধর্ষণের ঘটনার রাজনীতিকরণ। যারা এই সব ঘটনা ঘটিয়ে আগামী দিনে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার সুযোগ খুঁজছে, দুর্ভাগ্যবশত তাদের সেটা সফল হওয়ার সুযোগ নাই। কারণ এইসবের মাধ্যমে, এটাকে রাজনীতিকরণের মাধ্যমে মানুষের চোখ অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কুমিল্লায় কারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে এটা সবাই জানে। আমি যতটুকু জেনেছি, এটা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত, এরকম কেউ যেটা সামাজিক মাধ্যমেও এসেছে, বিভিন্ন পত্রিকায়ও খবরটি এসেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে, যা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আরও অবনতির দিকে গেছে। প্রতিবেশী দুটি দেশের সম্পর্কের বিষয়ে এক প্রশ্নে বিএনপি নেতা খসরু বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে সম্পর্ক থাকতে হবে। তবে সম্পর্ক থাকার জন্য তো কতগুলো পূর্ব–শর্ত থাকে, তাই না। সম্পর্ক যদি রাখতে হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কটা হতে হবে পাস্পরিক সম্মানবোধের আলোকে, এই সম্পর্কটা হতে হবে পরস্পরের স্বার্থরক্ষা স্বার্থে। এই সম্পর্কটা হতে হবে যেখানে কোনো অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ থাকবে না, এই বিষয়গুলো তো সামনে থাকতে হবে। এই বিষয়গুলো যখন নিশ্চিত করা যাবে, আমি মনে করি, আমাদের সম্পর্কটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটা আরও সহজ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।