চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সক্ষমতা বেড়েছে। হাসপাতালের চতুর্থ তলায় পুরনো আইসিইউ ইউনিট এবং নিচতলার আইসিইউ ইউনিটে এখন শয্যাসংখ্যা উন্নীত হয়েছে ৬০টিতে। পুরনো আইসিইউ ইউনিটটি একসময় ছিল ২০ শয্যার। সেখানে আরো ১০টি শয্যা বাড়ানো হয়। পুরনো আইসিইউ ইউনিট সংস্কারের জন্য দীর্ঘ সময় সেখানে রোগী ভর্তিও বন্ধ থাকে। তাই হাসপাতালের নিচতলায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় নির্মিত ৩০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটটি রোগীদের একমাত্র ভরসা। গত শনিবার থেকে পুরনো ইউনিট চালু হওয়ায় আইসিইউর সংকট ঘুচেছে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, আইসিইউ ইউনিটে অত্যাধুনিক শ্বাস–প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের মাধ্যমে মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে চট্টগ্রাম নগরীতে সরকারি পর্যায়ে রোগীর তুলনায় আইসিইউ বেডের সংখ্যা অপ্রতুল। বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা ব্যয় বেশি বলে গরিব ও সাধারণ রোগীরা সেখানে চিকিৎসা নিতে পারেন না। ফলে শেষ মুহূর্তে স্বজনদের চোখের সামনে অনেক রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। চমেক হাসপাতালের বর্তমানে ৬০ শয্যার বাইরে নগরীর মা ও শিশু হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল ও বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালে শতাধিক আইসিইউ শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে একমাত্র চমেক হাসপাতালে মিলছে ১৫ টাকার টিকেটে লাখ টাকার সেবা। তাই মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর কাছে সরকারি হাসপাতালের একটি আইসিইউ শয্যা যেন ‘সোনার হরিণ’।
চিকিৎসকরা জানান, সড়ক দুর্ঘটনা কিংবা মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত রোগীদের জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউ সাপোর্ট দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু আইসিইউ শয্যার সংকটের কারণে ওইসব রোগীর সঠিক সময়ে অস্ত্রোপচারও করা সম্ভব হতো না। দুর্র্ঘটনার রোগী ছাড়াও নিউরোসার্জারি, গাইনোকোলোজি, কার্ডিওলজি, কার্ডিয়াক সার্জারি, নেফ্রোলজি, মেডিসিন বিভাগ থেকে প্রচুর পরিমাণ ক্রিটিক্যাল রোগীকে আইসিইউতে রেফার করেন চিকিৎসকরা। এখন আইসিইউ শয্যা বৃদ্ধি হওয়ায় সংকট কিছুটা হলেও ঘুচবে। চমেক হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নেন, তাদের বেশিরভাগই দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। এদের পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আইসিইউর জন্য হাহাকার করতে করতে রোগী মারা যান।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন দৈনিক আজাদীকে বলেন, হাসপাতালের চতুর্থ তলায় পুরনো আইসিইউ ইউনিটে ১০ শয্যা বাড়ানো শেষে সেখানে রোগী ভর্তি নেওয়া শুরু হয়েছে। এই ইউনিটে আগে ২০টি শয্যা ছিল। এখন আরো ১০ শয্যা বৃদ্ধি করে ৩০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। এছাড়া আগে থেকেই নিচতলায় ৩০টি শয্যা চালু রয়েছে। আইসিইউর শয্যা বাড়ায় রোগীরা উপকৃত হবেন।