বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে বেশ কিছু পাটজাত পণ্য ও বোনা কাপড় আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। এসব পণ্য এখন থেকে শুধু মহারাষ্ট্রের নবসেবা সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে। দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের চলমান উত্তেজনার মধ্যে গতকাল শুক্রবার নয়া দিল্লি এ পদক্ষেপ নিল। গতকাল নতুন করে এ নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি করে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি)। নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া পণ্যের তালিকায় বিভিন্ন ধরনের বোনা কাপড়ের পাশাপাশি রয়েছে পাটের অপরিশোধি আঁশ ও পাঁটের সুতা (ক্যানাফ, হেম্প, রামি ইত্যাদি)। খবর বিডিনিউজের।
ডিজিএফটি বলছে, এই নিষেধাজ্ঞা ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটানে যাওয়া পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। তবে বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য নেপাল বা ভুটান হয়ে ভারতে রপ্তানি করা যাবে না।
বিশ্বে পাট ও পাটজাত আঁশ ও সুতার অন্যতম বড় রপ্তানিকারক বাংলাদেশ, এর এসব পণ্যের বড় গন্তব্য ভারত। অবজারভেটরি অব ইকোনমিক কমপ্লেক্সিটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ৯৩.৬ মিলিয়ন ডলারের পাট ও অন্যান্য টেঙটাইল ফাইবার ভারতে রপ্তানি করে। এর মধ্যে জুট ইয়ার্ন রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬১.৮ মিলিয়ন ডলার।
গত কয়েক মাসের মধ্যে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মত বাংলাদেশি পণ্যে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিল নয়া দিল্লি। এর আগে ১৭ মে ভারত বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের আমদানির ক্ষেত্রেও একইরকম বন্দর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। তার আগে ৯ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে দেওয়া হয়। শুধু নেপাল ও ভুটানের ক্ষেত্রে এ সুবিধা বহাল থাকে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সমপ্রতি উত্তেজনা বেড়ে যায়। পিটিআইয়ের বরাতে খবরে বলা হয়, গতকাল শুক্রবার ভারতের সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ‘ঘনিষ্ঠতার বিষয়টিও’ উঠে আসে।
টেঙটাইল খাতে বাংলাদেশকে ভারতের ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগী’ হিসেবে তুলে ধরে টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৯০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ভারতের রপ্তানি ছিল ১ হাজার ১৪৬ কোটি ডলার; আমদানি ছিল ২০০ কোটি ডলারের মত।