উত্তর চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম কাপ্তাই সড়ক। এই সড়কের রাঙ্গুনিয়া অংশের ড্রেনেজ ব্যবস্থার ত্রুটির জন্য প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছেন চালক ও যাত্রীরা। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের উপর দিয়ে গড়ায় পানি। এতে সড়কের বিভিন্ন স্পটের পাশ ভেঙে গিয়ে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির পানির সাথে পাহাড়ি মাটি সড়কের উপর জমে গিয়ে পিচ্ছিল কাদায় রূপ নিচ্ছে। এতে যানবাহন আটকে যাচ্ছে এবং মোটরসাইকেল চালকরা দুর্ঘটনার মুখে পড়ছেন। স্থানীয়রা সড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করা এবং জরুরি ভিত্তিতে এসব সমস্যার সমাধান করার দাবি জানান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাপ্তাই সড়কের তাপ বিদ্যুৎ গেটের পর থেকে সত্যপীর মাজার পর্যন্ত অংশে ড্রেনেজ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে সড়কের উপর দিয়ে পানির ঢল বয়ে যাচ্ছে। প্রায়শই এই অংশে সড়কের বিভিন্ন স্থানে পাশ থেকে ভেঙে পড়তে দেখা যায়। সত্যপীর মাজার এলাকায় সড়কের উপর দিয়ে পানি বয়ে যাওয়ায় এক পাশ ভেঙে গেছে। এর অদূরে কালভার্ট নির্মাণ করার কাজ চলছে। একই অবস্থা ভবানিমিল, আজিজনগর, গোডাউন ও ইছাখালী জেলেপাড়া এলাকায়ও। সম্প্রতি একটি ট্রাক সড়কের মাঝখানে বিকল হলে বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকতে দেখা যায় বিভিন্ন যানবাহনগুলোকে।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভোগান্তির নাম চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়ক। সড়কের উপর বাজার, টেঙি স্ট্যান্ড, সড়ক ও ফুটপাত দখলসহ নানা কারণে সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে অনেক আগে। প্রতিদিনের যানজটের পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনা। এ সড়কের পাশ ঘেঁষে শত শত গাছ ঝুঁকে রয়েছে। এছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের উপর দিয়ে পানির ঢল বয়ে যায়। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। যানজটে আটকে নষ্ট হচ্ছে মানুষের কর্মঘণ্টা।
এদিকে এই সড়ক চার লেনে উন্নীত করার দাবি জানাতে একটি কমিটি গঠন হয়েছে। সড়কটি প্রশস্ত করার দাবিতে সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা হয়। এছাড়া নানা আলোচনা, সংশ্লিষ্টদের স্মারকলিপি প্রদান, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি করে যাচ্ছে সংগঠনটি।
সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ শরীফ জানান, চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়ক দিয়ে উত্তর চট্টগ্রামের ৩৭ লাখ মানুষ চলাচল করে। কিন্তু দীর্ঘ ৬৪ বছরেও এই সড়কটি প্রশস্ত করা হয়নি। এতে এই সড়কে প্রতিনিয়ত যানজটে কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। চুয়েটের শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সড়কটি দুই লাইনে উন্নীত করার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। উল্টো পাশের ফুটপাত দখল করে ৩–৪ ফুট সড়ক প্রশস্তের কাজ চলছে। তাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমবে না, বরং সড়কের উপর হাঁটতে গিয়ে দুর্ঘটনা বাড়বে। অচিরেই এই সড়ক প্রশস্তের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) রাঙ্গুনিয়া সেকশনে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, তাপবিদ্যুৎ থেকে সত্যপীর মাজার পর্যন্ত সড়কের পানির সমস্যা সমাধানে ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। কালভার্ট নির্মাণের জন্য এই অংশে পানি যাতায়াতের ড্রেনটি বন্ধ রাখায় সড়কের উপর দিয়ে পানি যাচ্ছে। আগামী দেড় দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এরপর ড্রেনটি খুলে দেওয়া হলে পানির সমস্যা আর থাকবে না। ভবানিমিল অংশেও ১৩৫ মিটার ড্রেন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। সড়কে আসা মাটি অপসারণে নিয়মিত পরিষ্কার করার কাজ চলমান রয়েছে। যেসব স্পটে জরুরি সংস্কার প্রয়োজন সেখানে তৎপর রয়েছে সওজ। এছাড়া এই সড়কের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।