প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী থেকে সংগৃহীত ডিম থেকে উৎপাদিত রেণু গতকাল সোমবার থেকে বিক্রি করা শুরু হয়েছে। প্রতি কেজি রেণুর দাম দেড় লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গড়দুয়ারার ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর। প্রথম দফায় সাড়ে তিন কোটি টাকার রেণু বিক্রি প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এবার প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় রেণু ফোটানোর সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করেছে।
এদিকে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ক্রেতাদের উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন ডিম আহরণকারী ও রেণু উৎপাদনকারীরা। বৃষ্টির কারণে রেণু উৎপাদন কেন্দ্রে যাতায়াতের রাস্তা বন্যা ও ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। চাহিদা ও ক্রেতা সমাগমের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে রেণুর দাম নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এবার হালদা নদী থেকে সংগৃহীত ডিম থেকে কী পরিমাণ রেণু উৎপাদন হয়েছে, তার বাজার মূল্য কত হতে পারে তা নির্ধারণ করতে আজ মঙ্গলবার দায়িত্বশীল বিভাগের বৈঠক করার কথা রয়েছে। বৈঠকে মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নৌ পুলিশ, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির প্রতিনিধিরা থাকবেন বলে জানিয়েছেন হালদা গবেষক অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া।
একটি অসাধু চক্র কৃত্রিম রেণু বিক্রি নিয়ে তৎপর বলে আশঙ্কা করছেন ডিম সংগ্রহকারী ও রেণু উৎপাদনকারীরা। এই অসাধু চক্রের ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রেণু বিক্রেতারা। কারণ এই চক্র হালদা নদীর সুনাম নষ্ট করছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
জানা যায়, ২৬ মে দিবাগত রাত ও গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে মা মাছ দুই দফায় নদীতে নমুনা ডিম ছাড়ে। একই দিন দিবাগত রাতে নদীতে মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়ে। হালদা নদীর অংকুরিঘোনা থেকে কর্ণফুলীর মোহনা ছায়ারচর পর্যন্ত অন্তত ১৪টি স্থানে মাছ ডিম ছেড়েছে। এসব স্থান থেকে সাড়ে পাঁচশ ডিম সংগ্রহকারী আড়াইশ নৌকায় ১৪ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করেন। গত শনিবার থেকে ডিম থেকে রেণু ফোটানোর কাজ শুরু করেন ডিম আহরণকারীরা। সরকারি ৪টিসহ ১২টি বেসরকারি হ্যাচারি এবং ৬০টি মাটির কুয়ায় ডিম থেকে রেণু ফোটানোর কাজ চলছে। এবার প্রথম দফায় সাড়ে তিন কোটি টাকার রেণু বিক্রির প্রত্যাশা করছেন উৎপাদনকারীরা।
হাটহাজারী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জানান, হালদা নদীর হাটহাজারী অংশে ৮ হাজার ৩৪৯ বালতি ডিম সংগৃহীত হয়েছে। রাউজান উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের তথ্যমতে, ৪০ বালতি ডিম থেকে এক কেজি রেণু উৎপাদন হয়।