‘মিয়ানমার থেকে কিছু এক্সপোর্ট–ইমপোর্ট করতে হলে মিয়ানমারকেও ট্যাক্স দিতে হয়, আবার আরাকান আর্মিতে যারা আছে তারাও পয়সা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে একটা সমস্যাতো আছে, এটা আপনাদের বুঝতে হবে। এ সমস্যাটা সমাধান করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।’
গতকাল নগরীর সার্কিট হাউসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ সময় চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ উপস্থিতি ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আরাকান আর্মি এখানে ফাইট করতেছে অনেকদিন যাবৎ। এপারেও অনেকেই বিয়ে–টিয়ে করে ফেলছে–এটা নিয়ে অস্বীকার করার কিছু নাই। বর্ডারটা একটু ডিফিকাল্ট বর্ডার। আমরা মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ করি, কিন্তু বর্ডারটা দখল করে আছে আরাকান আর্মি। সমপ্রতি বান্দরবানের থানচি ইউনিয়নে সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যদের সাংগ্রাই উৎসব পালনের কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। যে খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এসেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেভাবে ভিডিওতে আসছে সেটা এমন নয়। টিকটক ভিডিও অনেকভাবে করা যায়, সবটা যে সত্য এটাতো না, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও না। এক্ষেত্রে আপনাদের ব্যালেন্স করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণসহ শান্ত পাহাড় হঠাৎ অশান্ত কেন–সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি পাহাড়ে তিনবার চাকরি করছি। পাহাড়ের অশান্তিতো আপনারা দেখেনই নাই। এখন ওই তুলনায় বলতে গেলে পুরাটা শান্ত। ওই ছোটখাট অপহরণতো প্লেইন ল্যান্ডেও হচ্ছে, খালি পাহাড়ের কেন দোষ দেন? পাহাড় আগের চেয়ে অনেকটা শান্ত আছে। তিনি বলেন, আমি যখন বাঘাইহাটে ছিলাম তখন ল্যান্ডমাইন দিয়ে পিকআপ উল্টে দিছে। তিন/চার জন করে মারা গেছে। তখনতো এ খবরগুলো আসেওনি, ওই এলাকায় এক্সসেইবিলিটিও ছিল না। বাট এখনতো আল্লাহ দিলে ওই রাস্তা দিয়ে পর্যটকরা সাজেক চলে যাচ্ছেন।
সামপ্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় খুন–সন্ত্রাস বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপদেষ্টা বলেন, ফটিকছড়ি, রাউজান, পটিয়া, সাতকানিয়া এলাকা হল পাহাড় এবং সমতল দুইটার সংমিশ্রণ। এ চট্টগ্রাম ডিভিশনে পাহাড়, সমতল, সমুদ্র সব পড়েছে। অন্যান্য এলাকার চেয়ে এখানকার সমস্যা একটু ডিফরেন্ট। সন্ত্রাসীরা অপকর্ম করে পাহাড়ের দিকে চলে যায়। রাউজানের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, যে ঘটনা ঘটে সেটার সত্যটা অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন। এটাতে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। অনেক সময় আছে, দুই একজনে…., ঘটনা সত্য না, কিন্তু প্রকাশ করে দেয়। সেসময় ইনভেস্টিগেশন করে দেখা যায় ঘটনা সত্য নয়, সেটা অসুবিধা হয়। সাথে পাশ্ববর্তী দেশের সাংবাদিকরা সুবিধাটা নেয়। তারা কিন্তু মিথ্যা সংবাদ বেশি পরিবেশন করে। এক্ষেত্রে আপনাদের একটা সুনাম আছে, আপনারা সত্য সংবাদ সবসময় দিয়ে যান।