সতর্ক থাকুন ঈদ যাত্রার আগে ও পরে

প্রদীপ ভট্টাচার্য | শুক্রবার , ২৮ মার্চ, ২০২৫ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

প্রতি বছরের মতো ঈদুল ফিতরের আনন্দ ভাগাভাগি করতে মানুষ ছুটে যায় শহর ছেড়ে শেকড়ের সন্ধানে। ঈদ যাত্রায় স্বাভাবিক ভাবেই বিভিন্ন যাতায়াত পথে যাত্রীদের চাপ বাড়ে ঈদের আগে ও পরে। বিশেষ করে সড়ক, রেল ও নৌপথে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। এটি প্রতি বছরের পরিচিত দৃশ্য। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের সুফল মানুষ পেতে শুরু করলেও প্রতিবছর ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি যেন কোনভাবেই কমছে না। এবারের ঈদের লম্বা ছুটিতে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টানসহ সব ধর্মের বিপুলসংখ্যক মানুষ সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে বা অন্যান্য জায়গায় বেড়াতে যেতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়বে এটাই বাস্তবতা। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঈদের সময় ঘরমুখো যাত্রীদের মধ্যে ১০ ভাগ রেল পথে, নদীপথে ৫ ভাগ ও বাকি ৮৫ ভাগ যাত্রী বিভিন্ন যানবাহন ও বাসের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু রাস্তাঘাটের অবস্থা মোটামুটি ভালো হলেও তা যথেষ্ট নয়। তাই সেই সুযোগে পরিবহন মালিকরা ঈদের আগে ও পরে নানা অজুহাতে টিকেট সংকট দেখিয়ে ভাড়া যেমন অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি করে তেমনি যাত্রীদের সংকটও বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু এই সংকট কালেও মানুষ বিশেষ করে গ্রামের বাড়িতে মাবাবা, ভাই বোন, স্ত্রী সন্তান, পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগ করতে ক্রটিপূর্ণ, ফিটনেসবিহীন, অনিবন্ধিত লঞ্চ বা বাসে, এমন কি কেউ কেউ লক্কর ঝক্কর মার্কা গাড়িতে, বা ট্রেনের ছাদে, নৌযানে, বাসের ছাদে ও ভেতরে বাহিরে ঝুলিয়ে যেতে বাধ্য হয়। অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই এর ফলে প্রতি বছর ছোটবড় দুর্ঘটনায় ঈদের আনন্দ বিষাদে রূপ নেয় অনেকের। এর মধ্যে বেপরোয়া মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা অন্যতম। এছাড়া সাধারণত ঈদের সময় চুরি ও ছিনতাই, মলম পাটি ও অসৎ ব্যাক্তিদের তৎপরতা অনেক অংশে বেড়ে যায়। এদের ফাঁদে পড়ে অনেকে হারায় কষ্টের অর্জিত সম্পদ ও ঈদের কেনাকাটর জিনিসপত্র।

এছাড়া ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু বান্ধবের অগোচরে অনেক শিশু কিশোর পুকুরে, সাগরে ও নদীতে স্নান বা সাঁতার কাটতে গিয়ে ডুবে মারা যাবার ঘটনাও ঘটে। আবার অনেক সময় বাড়ির ছাদের উপর খেলতে গিয়ে ছাদ থেকে পরে কিংবা ছাদ সংলগ্ন বিদ্যুৎ তারে জড়িয়ে মৃত্যুবরণও করে। আবার এমনও দেখেছি ঈদের ছুটিতে মাবাবা কিংবা নিকট আপনজনের অনুপস্থিতিতে অনেক শিশুকিশোর শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতিত হয়েছে। সুতরাং ঈদের ছুটির আগে ও পরে এধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যেন না ঘটে সেদিকে খেয়াল যেমন রাখতে হবে ঠিক তেমনি ঈদে বেড়াতে যাওয়া সব ধর্মের পরিবারকে বিশেষ করে শিশুকিশোদের চোখে চোখে রাখতে হবে। দায়িত্বশীল হতে হবে নিজ নিজ সন্তান ও স্বজনদের প্রতি। সর্তক থাকতে হবে ঈদ যাত্রার আগে ও পরের দিনগুলোতে। অন্যথা ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদ যাত্রা হোক নিরাপদ
পরবর্তী নিবন্ধঈদ হোক আনন্দের