জয়দেবপুরে বাঙালি সেনাদের নিরস্ত্র করার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১৯ মার্চ, ২০২৫ at ৪:২৬ পূর্বাহ্ণ

১৯৭১ সালের এদিন সেনাবাহিনীর গুলিতে শহীদদের মধ্যে ছিলেন হুরমত, নিয়ামত ও মনু খলিফাসহ আরো অনেকে। বহু লোক আহত হন। বীর বাঙালির এই সশস্ত্র প্রতিরোধের কারণে ব্যর্থ হয় জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সেনাদের নিরস্ত্র করার পরিকল্পনা। জয়দেবপুরের সংঘর্ষের খবর বিদ্যুৎ বেগে ছড়িয়ে পড়ে উত্তাল ঢাকাসহ সারা দেশে। স্লোগান ওঠে, জয়দেবপুরের পথ ধরো বাংলাদেশ স্বাধীন করো।

এদিন সন্ধ্যায় জয়দেবপুর শহরে অনির্দিষ্টকালের সান্ধ্য আইন জারি করা হয়। জয়দেবপুরে নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর সেনাবাহিনীর গুলির তীব্র নিন্দা জানিয়ে সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু এক বিবৃতিতে বলেন, যারা বুলেট ও শক্তি দিয়ে গণ আন্দোলনকে স্তব্ধ করবেন বলে ভেবেছেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। বাংলাদেশের মানুষ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। কিন্তু এর অর্থ এই নয়, তারা শক্তি প্রয়োগে ভয় পায়। একদিনের বিরতির পর এদিন ঢাকায় বেলা ১১টায় আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার তৃতীয় দফা একান্ত বৈঠক হয়।

ঢাকাসহ সারা দেশে কালো পতাকা উত্তোলন অব্যাহত থাকে। সরকারিআধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি চলে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ভবনে উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক হয়। আওয়ামী লীগের পক্ষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, কামাল হোসেন এবং সরকারের পক্ষে বিচারপতি এআর কর্নেলিয়াস, লেফটেন্যান্ট জেনারেল পীরজাদা ও কর্নেল হাসান অংশ নেন। দুই ঘণ্টার বৈঠকে আলোচনার ‘টার্ম অব রোফারেন্স’ ঠিক করা হয়। এদিনও বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে অনেক মিছিল যায়। সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে শেখ মুজিব বলেন, শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাঁচার ব্যবস্থা করে যাব।

ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া অহেতুক ঢাকায় সময় নষ্ট করছেন। ইয়াহিয়া খানের বোঝা উচিত শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ছাড়া পাকিস্তানকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। জেনারেল ইয়াহিয়া খানের মনে রাখা উচিত, তিনি জনগণের প্রতিনিধি নন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কে নুনিয়াছড়ার হাজারো মানুষ
পরবর্তী নিবন্ধযমুনা নদীর উপর দীর্ঘতম রেলসেতু উদ্বোধন