অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে ভারত

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ৫ মার্চ, ২০২৫ at ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ

ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের প্রতিশোধ নিয়েছে ভারত। গতকাল মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেমি ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে ভারত। দুবাইয়ে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৩ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান করে অস্ট্রেলিয়া। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। ভারতের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ শামি। জবাবে খেলতে নেমে ৪৮ ওভার এক বলে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।

২৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই শুবমান গিলকে হারায় ভারত। ৮ রান করে গিল ফিরলে ভাঙে ৩০ রানের উদ্বোধনী জুটি। আরেক ওপেনার রোহিত শর্মা ভালো শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২৯ বলে ২৮ রান আসে অধিনায়কের ব্যাট থেকে। ৪৩ রানে দুই উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ার। ইনফর্ম আইয়ার ফিরেন ফিফটি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে। ৬২ বলে করেছেন ৪৫ রান। এরপর অক্ষর প্যাটেল (২৭), হার্দিক পান্ডিয়ারাও (২৮) থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। এক প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও আরেক প্রান্তে অবিচল ছিলেন বিরাট কোহলি। এই অভিজ্ঞ ব্যাটার জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছেন। তবে ফিরেছেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি না পাওয়ার হতাশা নিয়ে। ৯৮ বলে করেছেন ৮৪ রান। সেঞ্চুরি না পেলেও কোহলি আইসিসির ওয়ানডে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ হাফ সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ডসহ কয়েকটি কীর্তি গড়েছেন। এতদিন পর্যন্ত আইসিসির ওয়ানডে ফরম্যাটের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ ২৩টি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস ছিল ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের। ৫৮ ইনিংস খেলে তিনি ওই কীর্তি গড়েছিলেন। তবে গতকাল ৫৩তম ওয়ানডে ইনিংসে শচীনকে ছাড়িয়ে গেলেন কোহলি। ওয়ানডের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় তারই এখন সর্বোচ্চ ২৪টি পঞ্চাশোর্ধ রানের ইনিংস রয়েছে। শেষদিকে এসে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন লোকেশ রাহুল। তার ৩৪ বলে অপরাজিত ৪২ রানের ইনিংসে ভর করে ১১ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। অস্ট্রেলিয়ার এলিস এবং জাম্পা দুটি করে উইকেট নেন।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। কপার কনোলিকে নিয়ে সেমিতে বাজি ধরেছিল অজিরা। সেটাই হেরেছে তারা। মাত্র দুই ওয়ানডে খেলা তরুণ এই ব্যাটার সেমির মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ইনিংস ওপেন করতে নেমে পুরোপুরি ব্যর্থ হন। ৯ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। কনোলি সুবিধা করতে না পারলেও আরেক ওপেনার ট্রাভিস হেড দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে আরো একবার ভারতীয় সমর্থকদের মনে ভয় ধরিয়েছিলেন তিনি। তবে ফিরেছেন ব্যক্তিগত ফিফটি পাওয়ার আগেই। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৩ বলে ৩৯ রান। মিডল অর্ডারে এদিন ব্যর্থ মার্নাস ল্যাবুশেন ও জস ইংলিস। দুজনই উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ল্যাবুশেন ৩৬ বলে করেছেন ২৯ রান। আর ইংলিসের ব্যাট থেকে এসেছে ১১ রান। বাকিদের আসাযাওয়ার মাঝেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন স্টিভেন স্মিথ। তবে বেশ ধীরগতির ব্যাটিং করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ফিরেন ৯৬ বলে ৭৩ রানে। বড় ম্যাচে এসে ব্যর্থ গ্লেন ম্যাঙওয়েলও। এক ছক্কায় ৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। পরের বলেই অক্ষর প্যাটেলের বলে বোল্ড হয়ে যান। ২০৫ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়াকে আড়াইশ ছাড়ানো সংগ্রহ এনে দিতে বড় অবদান রেখেছেন অ্যালেঙ ক্যারি। এই মিডল অর্ডার ব্যাটার এক প্রান্তে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। তবে অপর প্রান্তে কেউই তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেনি। রান আউটে কাটা পড়ার আগে ৫৭ বলে ৬১ রান করেন তিনি। ভারতের পক্ষে মো. শামি ৩টি ও বরুন চক্রবর্তী এবং রবীন্দ্র জাদেজা ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন বিরাট কোহলি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ
পরবর্তী নিবন্ধঢাকা বিমানবন্দরে গ্রেফতার রাঙ্গুনিয়া যুবলীগের সা. সম্পাদক