‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ ৭৮১ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার ৪৫৪ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদক। গতকাল রোববার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের মামলা দায়েরের তথ্য দিয়েছেন। নজরুল ইসলাম মজুমদার এঙ্মি ব্যাংক ও ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির সাবেক চেয়ারম্যান। দুদক কর্মকর্তা বলেন, সংস্থার সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা–১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ। মামলায় নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নজরুল ইসলাম মজুমদারের নিজ নামে ঢাকার গুলশান এভিনিউ রোডে ১৪ তলা ভবন, তেজগাঁও শিল্প এলাকায় তিনতলা ভবন, নিউ ডিওএইচএস–এর লেক রোড–১৮ এ দোতলা বাড়ি, নিউ ডিওএইচএস–এর ১৮ নম্বর রোডে চারতলা বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাবর সম্পদ রয়েছে, যার মূল্য ৫৩২ কোটি ৮৭ লাখ। তার নামে এঙ্মি ব্যাংকের ৬৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার এবং নাসা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৩০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার রয়েছে। সব মিলিয়ে নজরুল ইসলাম মজুমদারের অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ৫৯৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে নাসা গ্রুপের কর্ণধারের ১ হাজার ১৩২ কোটি ৬৬ লাখ টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া গেছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৩–২৪ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী, নজরুল ইসলাম মজুমদারের দায়–দেনা ২৯৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। দায়–দেনা বাদ দিয়ে তার নিট সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ৮৩২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ২০০৫–০৬ করবর্ষে তার নিট সম্পদের মূল্য ছিল ১৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এছাড়া ২০০৫–০৬ করবর্ষ থেকে ২০২৩–২৪ করবর্ষ পর্যন্ত নজরুল ইসলাম মজুমদারের গ্রহণযোগ্য মোট আয় ৪২২ কোটি ১১ লাখ টাকা। এ সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ, পারিবারিক খরচসহ তার অন্যান্য ব্যয় ছিল ৩৭০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা এবং বৈধ উৎস থেকে সঞ্চয়ের পরিমাণ ছিল ৫১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এ হিসাব অনুযায়ী, নজরুল ইসলাম মজুমদারের ‘জ্ঞাত আয়ের’ বাইরে অর্জিত সম্পদের মূল্য ৭৮১ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার ৪৫৪ টাকা, যা তিনি নিজের দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪–এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে।