পানি সরবরাহের ব্যাপারে সিডিএ-ওয়াসা ঐকমত্য

কর্ণফুলী আবাসিক প্রকল্প পাইপলাইন স্থাপনের টাকার সংস্থান করবে সিডিএ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

৩০ বছর ধরে ঝুলে থাকা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্ণফুলী আবাসিক প্রকল্পে পানি সরবরাহের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে সিডিএ এবং ওয়াসা। গতকাল মঙ্গলবার সিডিএর বোর্ড সভায় আলোচনা শেষে এই ঐকমত্য হয়। পানির অভাবে পরিত্যক্ত হতে যাওয়া এই আবাসিক এলাকার ৫১৯টি প্লটে পানি সরবরাহের জন্য পাইপলাইন স্থাপনের খরচ দেবে সিডিএ। তবে আগের সমীক্ষায় ১০ কোটি টাকা খরচের ব্যাপারটি পুনরায় হিসাব করা হবে। যত কম খরচে সম্ভব পাইপ স্থাপন করে পানি সরবরাহ করা হবে। একটি সূত্র বলেছে, সম্পন্ন হওয়া প্রকল্পের ব্যাপারে নতুন করে টাকা খরচ করার সুযোগ সিডিএর নেই। এক্ষেত্রে ৫১৯টি প্লটের মালিকের কাছ থেকে কাঠা প্রতি একটি হার নির্ধারণ করে টাকার সংস্থান করার চেষ্টা করা হবে। বিষয়টি নিয়ে প্লট মালিক সমিতির সাথে সিডিএ কর্তৃপক্ষ বৈঠক করবে।

জানা যায়, ১৯৯৪ সালে সিডিএ কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্জ্যারটেকে ৫১.৬৭ একর জায়গার কর্ণফুলী আবাসিক এলাকা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। প্লট বরাদ্দ দেওয়ার পর দেখা যায়, এলাকায় সুপেয় পানি নেই। নানাভাবে চেষ্টা করেও পানির সংস্থান না হওয়ায় ৩০ বছর ধরে প্রকল্পটি ঝুলে রয়েছে। একটি প্লটেও বাড়িঘর তৈরি হয়নি। পানির অভাবে এলাকাটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। ৫১৯টি প্লটের মালিকেরা সমিতি গঠন করে এলাকায় পানির সংস্থান করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেন। ওয়াসা দক্ষিণ চট্টগ্রামে পানি দেওয়ার জন্য ভান্ডালঝুরি প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পর বিষয়টি নিয়ে প্লট মালিকেরা আশাবাদী হন। কিন্তু ভান্ডালজুরি পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে কর্ণফুলী নদীর বাম তীরে শিকলবাহা, চরপাথরঘাটা, রাঙ্গাদিয়া, বড় উঠান, চরলক্ষ্যা, ২৯০০ একর বিশিষ্ট কোরিয়ান ইপিজেড, ২টি বৃহত্তম সার কারখানা, কয়েকটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, স্টিল মিল এবং ১০ মেগাওয়াট বিশিষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মিল, শিল্প কারখানা ও তার আশেপাশের জনবসতি এলাকায় ওয়াসা পানি সরবরাহের কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবে কর্ণফুলী আবাসিক এলাকায় এখনো পাইপলাইন হয়নি।

প্লট মালিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিডিএ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নুরুল করিম ব্যক্তিগতভাবে কর্ণফুলী আবাসিক এলাকায় পানি সরবরাহ করার অনুরোধ করে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেন। ওয়াসার পক্ষ থেকে উক্ত আবাসিক এলাকায় পাইপলাইন নেই উল্লেখ করে সিডিএকে জানানো হয়, এখন পাইপলাইন স্থাপন করতে ১০ কোটি টাকা প্রয়োজন। সিডিএ এই টাকা প্রদান করলে ওয়াসা উক্ত আবাসিক এলাকায় পানি সরবরাহ দেবে। কিন্তু সিডিএ ১০ কোটি টাকা কোত্থেকে দেবে তার সংস্থান করতে পারছিল না।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে গতকাল সিডিএর বোর্ড সভায় সদস্য হিসেবে যোগ দেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার পাশা। সভায় সিডিএর বোর্ড সদস্যদের প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলে সিডিএর চেয়ারম্যান এবং ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঐকমত্যে পৌঁছান। সিডিএ পাইপলাইন স্থাপনের টাকার সংস্থান করবে বলে ওয়াসার এমডিকে আশ্বস্ত করে বলা হয়, ১০ কোটি টাকা থেকে অংকটি কমালে সুবিধা হবে। ওয়াসার এমডি পাইপলাইন স্থাপনের খরচের ব্যাপারটি পুনরায় হিসাব করে যতটুকু কমে সম্ভব করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পাইপলাইন স্থাপন করার পর কর্ণফুলী আবাসিকে পানি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে আর বাধা থাকবে না বলে বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ কাউন্সিলের মাধ্যমে, অধ্যাদেশ জারি
পরবর্তী নিবন্ধসুইজারল্যান্ড পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা