যানজট নিরসনে নগরে একাধিক বাস–ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র ড. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, সিটি গেট, অক্সিজেন, কালুরঘাট, পতেঙ্গাসহ প্রয়োজনীয় এলাকাগুলোতে জেলা প্রশাসন, রেলওয়ে, গণপূর্ত, রোডস এন্ড হাইওয়ে, চা বোর্ডসহ যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানের অব্যবহৃত বা বেদখলকৃত ভূমি আছে সেগুলোতে টার্মিনাল করার জন্য পদক্ষেপ নেব।
তিনি গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর বাস, মিনিবাস, হিউম্যানহলার অটো–টেম্পো, সিএনজি, বেবী টেক্সি মালিক–চালক ঐক্য পরিষদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন। টাইাগারপাস নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। বক্তব্য রাখেন পরিবহন চালকদের ১৫টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক জাফর আহম্মদ, সদস্য সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সদস্য সাবেক কাউন্সিলর মো. নাজিম উদ্দিনসহ নেতৃবৃন্দ।
ঐক্য পরিষদের নানা দাবি : সভায় চট্টগ্রাম মহানগর বাস, মিনিবাস, হিউম্যানহলার অটো–টেম্পো, সিএনজি, বেবী টেক্সি মালিক–চালক ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে– ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধ করা, ব্যাটারি চালিত রিকশা চার্জ দেয়ার জন্য অবৈধ বিদ্যুতের লাইন সরবরাহ বন্ধ করা, গাড়ির উপর ট্রাফিক বিভাগের প্রদত্ত হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ করা এবং জরিমানার হার ঢাকার সাথে সমন্বয় করা, যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যানজট তৈরি না করে গাড়ির রুটের শুরুর পয়েন্ট এবং শেষ পয়েন্টে কাগজপত্র চেক করা, ট্রাফিক বিভাগের ‘অসাধু’ সার্জেন্ট–টিআইসহ কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মাধ্যমে রুট পারমিট ছাড়া গাড়ি চালানো ও গ্রাম সিএজি ট্যাক্সি শহরে চলাচল বন্ধ করা, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং পর্যাপ্ত পার্কিং চালু করা। এছাড়া নগরের বাইরে থেকে আসা বাস–ট্রাক টার্মিনালে না গিয়ে শহরের মধ্যে এসে যানজট তৈরি করছে দাবি করে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।
মেয়র যা বললেন : সভায় মেয়র বলেন, আমি যানজটমুক্ত চট্টগ্রাম গড়তে চাই। এ জন্য নগরের বিভিন্ন প্রবেশমুখ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে একাধিক টার্মিনাল প্রয়োজন। কয়েকটা স্পট আমরা দেখেছি। ইঞ্জিনিয়াররা ভিজিট করছে বিভিন্ন এলাকায়। ট্রাফিক বিভাগের সাথে আমরা বসব। বিশেষ করে এডিশনাল কমিশনার ট্রাফিক এবং ডিসি ট্রাফিক চারজন, টোটাল পাঁচজন নিয়ে বসার একটা পরিকল্পনা আছে। শহরকে যানজটমুক্ত রাখার বিষয়ে উনাদেরও মতামত নেব।
শাহাদাত বলেন, শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শৃক্সখলা। গাড়িগুলো যত্র–তত্র না দাঁড়িয়ে যাত্রী ছাউনি অথবা বাস স্টপেজ–এ দাঁড়াতে হবে। এতে একটা শৃক্সখলা চলে আসবে। তিনি বলেন, আপনি যখন সুনির্দিষ্ট বাস স্টপে না দাঁড়িয়ে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে প্যাসেঞ্জার নিবেন তখনই যানজট হয়। আমাদেরকে সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। প্রতিটি জায়গায় আমি দেখছি যে সচেতনতার উপরে আর কোনো কিছুই নেই। আমাদের সবাইকে সচেতন করতে হবে এবং সেটা ময়লা পরিষ্কার থেকে শুরু করে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সহ সব বিষয়ে।
তিনি বলেন, ড্রাইভাররা যারা গাড়ি চালায় তাদেরকে একটু আপনারা বলবেন যে যাতে করে তারা জোরে গাড়ি না চালায়। অনেকে হয়তো বা মদ্যপান করে চালায়, সবাই না কিছু কিছু চালক তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। অনেকে অসুস্থ থাকলেও তা লুকিয়ে রাখে। এ বিষয়গুলো সতর্কতার সাথে দেখবেন। কারণ শুধু গাড়ি ড্রাইভ করলে হবে না, যাত্রীর নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ। চালকের নিজের নিরাপত্তাও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে একটি সুন্দর শহর, যানজটমুক্ত শহর, ডিসিপ্লিনড একটি শহর উপহার দেয়ার জন্য সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।