চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত। চট্টগ্রাম ৭০ লাখ মানুষের শহর। এখানে সকল ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে আমি একটি সুন্দর চট্টগ্রাম গড়তে চাই। এ চট্টগ্রাম শহরে যারা বাস করছে তাদের পাশে থেকে আমি কাজ করে যেতে চাই। কিছুদিন আগে হাজারী গলিতে একটা সমস্যা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে কিছু প্রতিনিধি আমার কাছে এসেছিল। আমি তখন ডিসির সঙ্গে কথা বলে দোকানপাট খুলে দেওয়ার জন্য বলেছি। যাতে সেখানে কোনো সমস্যা না হয়। এরপরে দোকান খুলে দেওয়া হয়। সেখানে একটি মামলা হয়েছে, মামলার কারণে অনেকেই দোকানে আসতে ভয় পাচ্ছে। আমি তাদেরকে বলেছি আপনারা একটা শান্তি সভা করেন। সবাইকে দাওয়াত দেন। কেউ আসুক বা না আসুক আমি মেয়র হিসেবে আসব এবং আপনাদের পাশে থাকব। আমি নই, আমরা সবাই মিলে সুন্দর চট্টগ্রাম গড়ে তুলবো।
তিনি গতকাল শুক্রবার রাতে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব উপলক্ষে চারদিন ব্যাপী ধর্মসভা মহোৎসব ও প্রসাদ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখানে বলুয়ার দীঘির মহাশ্মশান সংস্কারের দাবির কথা এসেছে। মহাশ্মশান সংস্কারের ব্যাপারে যেটা দরকার সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আমি করে দিব। আর নতুন একটি মহাশ্মশানের কথা বলা হয়েছে। আসলে নতুন মহাশ্মশান করার মত জায়গা সিটি কর্পোরেশনের নেই। তাই বন্দর অথবা রেলওয়ের কোনো জায়গা যদি আপনারা ঠিক করেন তাহলে আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা পাবেন। আমার কাছে কোনো বৈষম্য থাকবে না। আমি সেবক হিসেবে আপনাদের পাশে থাকবো। এই চট্টগ্রামকে নিরাপদ শহরে পরিণত করবো। সন্ত্রাসীদের কোনো স্থান এই চট্টগ্রামে হবে না।
তিনি বলেন, আমরা সত্যিকার অর্থেই একটা অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক একটা সমাজ নির্মাণ করবো। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আজকে সেই সুযোগ আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। আমরা একটা দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করে সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি, যেখানে আমাদের একটা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখানে আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। থাকবে না কোনো ঘৃণার রাজনীতি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাস উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক লায়ন আর কে দাশ রুপু। আশীর্বাদক ছিলেন রাঙমাটি ওমকেশ্বর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী বিদাহনন্দ পুরী মহারাজ। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুজিত কুমার বিশ্বাস মন্টু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাস মহোৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব লায়ন তপন কান্তি দাশ। জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সদস্য সাংবাদিক বিপ্লব পার্থের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার, বিমল কান্তি দে, অধ্যাপক স্বদেশ চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অর্পণ ব্যানার্জী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব ধর তমাল, সুন্দর তৃষ্ণ দাস, শিক্ষক উত্তম চক্রবর্তী প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।