শচীনদেব বর্মণ : কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী

| বৃহস্পতিবার , ৩১ অক্টোবর, ২০২৪ at ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ

নিশিথে যাইয়ো ফুলবনে, ‘তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল’, ‘তুমি এসেছিলে পরশু কাল কেন আসোনি’, ‘বাঁশি শুনে আর কাজ নাই, সে যে ডাকাতিয়া বাঁশি’এসব কালজয়ী গানের সুরস্রষ্টা আজকের আলোচ্য কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী শচীনদেব বর্মণ (১৯০৬১৯৭৫)। যিনি এসডি বর্মণ নামেই পরিচিত। তিনি একাধারে জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার, গায়ক ও লোকসঙ্গীত শিল্পী। কেবল সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে নয়, গীতিকার হিসাবেও তিনি সার্থক। তিনি বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। শচীনদেব বর্মণের জন্ম ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দের ১ লা অক্টোবর কুমিল্লায়। বাবা নবদ্বীপচন্দ্র দেববর্মণ। শচীন দেব বর্মণ ত্রিপুরার চন্দ্রবংশীয় মানিক্য রাজপরিবারের সন্তান। শচীনদেব বর্মণ ত্রিপুরার চন্দ্রবংশীয় মানিক্য রাজপরিবারের সন্তান। তাঁর পড়ালেখার শুরুটাও হয়েছিল কুমিল্লাতেই। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন তিনি। পরে ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আইএ এবং বিএ সম্পন্ন করেন। ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএতে ভর্তি হন। শচীনের সংগীতের হাতেখড়ি বাবা নবদ্বীপচন্দ্র দেববর্মনের হাতেই। বাবা নবদ্বীপচন্দ্র ছিলেন একজন সেতারবাদক এবং ধ্রুপদী সঙ্গীতশিল্পী। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে ত্রিপুরার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পিতার বিয়োগে ভেঙ্গে পড়েন শচীন। মূলত পিতার মৃত্যুর পর থেকেই সংগীত সাধনায় পুরো মনোনিবেশ করেন শচীন বর্মণ। ১৯২৫ সাল থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত কৃষ্ণচন্দ্র দে’র কাছে তিনি সঙ্গীতের প্রথাগত তালিম নেওয়া শুরু করেন। তারপর একে একে ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, সারেঙ্গীবাদক বাদল খান, সরোদবাদক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানের কাছে সঙ্গীত ও বাদ্যযন্ত্রের শিক্ষা গ্রহণ করেছেন শচীন দেব। কুমিল্লায় থাকাকালীন কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে থেকে স্থায়ীভাবে মুম্বাইয়ে বসবাস করতে শুরু করেন। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে অল ইন্ডিয়ান মিউজিক কনফারেন্সে তিনি গান গেয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে বেঙ্গল মিউজিক কনফারেন্সে ঠুমরি পেশ করে ওস্তাদ ফৈয়াজ খাঁকে মুগ্ধ করেছিলেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে প্যারালিটিক স্ট্রোক হয়ে কোমায় ছিলেন পাঁচ মাস। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ শে অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধঅতৃপ্ত মোহের বাণী