সেন্টমার্টিন দ্বীপ রক্ষায় সরকারের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোনো ধরনের হামলা হলে সরকার কাউকে ছেড়ে দেবে না। গতকাল শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলছিলেন।
সেন্টমার্টিন দখল হয়ে গেলে বাংলাদেশ কোন প্রক্রিয়ায় সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে–এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা আক্রান্ত হলে সেই আক্রমণের জবাব দেব। আমরা আমাদেরকে এত খাটো করে দেখি কেন? আমরাও প্রস্তুত আছি। আমরা আক্রমণ করব না। কিন্তু আক্রমণ হলে কি আমরা ছেড়ে দেব? খবর বিডিনিউজের।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে গত এক মাস টেকনাফসহ উপকূলীয় এলাকা মোটামুটি শান্তই ছিল। কিন্তু ৫, ৮ এবং ১১ জুন নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে মিয়ানমারের অংশ থেকে সেন্টমার্টিনগামী নৌযানে গুলি করা হয়। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সঙ্গে টেকনাফ ও কঙবাজারের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
এর মধ্যে বুধবার দুপুরে নাফ নদীতে দেখা মিলে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর জাহাজ। এরপর রাত থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপসহ আশপাশের সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের ওপার হতে থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসতে শুরু করে। ফলে দ্বীপে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দেয়। পরে কঙবাজার জেলা প্রশাসনের এক জরুরি সভায় বৃহস্পতিবার থেকে বিকল্প পথে যাত্রী এবং পণ্যবাহী ট্রলার চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। শুক্রবার খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী নিয়ে জাহাজ পাঠানো হয়েছে সেন্টমার্টিনে। এর মধ্যে মিয়ানমারের জাহাজটি সরে গেছে বলে তথ্য মিলেছে।
কাদের বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কিছু সংঘর্ষ আছে। ৫৪টা কমিটি রয়েছে। এদের সাথে কারো মিল নেই। রাখাইন–আরাকান বিদ্রোহীরা প্রকাশে বিদ্রোহ করে যাচ্ছে। ওদের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জন্য আমরা যদি সাফার করি, সেটাও তো অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বর্তমান (মিয়ানমার) সরকার মিলিটারি গভর্নমেন্ট। তাদের সাথে আমাদের কোনো বৈরিতা নেই। আলাপ আলোচনার দরজা এখনো খোলা আছে। আমরা কথা বলতে পারি। যতক্ষণ কথা বলা যাবে, আলাপ আলোচনা করা যাবে, উই আর নট এ মুভ ডাউন, এমন পর্যায় না হলে আমরা আলাপ আলোচনা মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছি এবং করে যাব।
এ সময় জাতিসংঘের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, দুঃখজনক। জাতিসংঘ এখন নখদন্তহীন। তাদের কথা ইসরায়েল শোনে না। বড় বড় দেশগুলোও শোনে না।
সরকার পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই : সরকার পরিবর্তনের আর কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে কাদের বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের আন্দোলনের সক্ষমতা নেই। আমাদের দেশের সরকার পরিবর্তনের মাধ্যমটা নির্বাচন। জনগণের ভোটে সরকার পরিবর্তিত হয়। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়ে গেছে। এখন প্রসঙ্গ হলো গণঅভ্যুত্থান। তারা তো বলে কয়েকদিনের মধ্যেই সরকারের পতন ঘটবে। এটা হাস্যকর। তাদের নেতাকর্মীরা তো এখন আন্দোলন করছেন না। তাদের পার্টির নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মানসিকতা নেই।
আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তন বিএনপির দিবাস্বপ্ন। কারণ তাদের আন্দোলন সংগ্রামে জনগণের সম্পৃক্ততা নেই।
এ সময় ঈদ ঘিরে দেশের সড়ক–মহাসড়কের পরিস্থিতি তুলে ধরে সরকারের সেতুমন্ত্রী বলেন, পশুবাহী গাড়ি ও সড়কের পাশে পশুর হাটের কারণে সড়কে কিছুটা চাপ ও যানজট থাকলেও কোনো ভোগান্তি নেই।