আগের সিরিজে কিছুটা হলেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছিল বাংলাদেশের নারীরা। কিন্তু এবারের সিরিজে কোনরকম পাত্তাই পেলনা স্বাগতিক নারী ক্রিকেট দল। ভারতের কাছে টানা তিন ম্যাচে হেরে এরই মধ্যে সিজি খুইয়ে বসেছে নিগার সোলতানার দল। আর ভারতীয়রা বেশ দাপটের সাথেই সিরিজ জিতে নিল। তিন ম্যাচের কোনটিতেই ভারতীয়দের পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি টাইগার নারীরা। প্রথম ম্যাচটিতে আনায়াস জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচটি ভারতীয়রা জিতেছিল বৃষ্টি আইনে। আর গতকাল তৃতীয় ম্যাচেও আনায়াস জয় ভারতীয় নারীদের। সে সাথে সিরিজও। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয়টিতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত নারী ক্রিকেট দল। টানা তিন ম্যাচেই ব্যাটিং ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বাংলার নারীরা। তিন ম্যাচে টাইগার নারীদের ইনিংস যথাক্রমে ১০১, ১১৯ এবং ১১৭।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার দিলারা আক্তার ও মুর্শিদা খাতুন। ৪৬ রান যোগ করেছিলেণ দুজন। ৯ রান করে ফিরেছেন মুর্শিদা। ৯ রান পর ফিরেছেন আরেক ওপেনার দিলারা। যদিও তার ব্যাট থেকে আসে ২৭ বলে ৩৯ রানের ঝলমলে ইনিংস। যা বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। তৃতীয় উইকেটে হাল ধরেন নিগার সুলতানা জ্যোতি ও সোবহানা মোস্তারি। কিন্তু রানের গতি কমে যায় কিছুটা। তারা ২৮ বলে গড়েন ২৩ রানের জুটি। এ জুটিও ভাঙে অনেকটা খামখেয়ালিতে। থার্ড ম্যানে ফেলে দ্রুত রান নেওয়ার জন্য দৌড় শুরু করেন জ্যোতি ও সোবহানা। ক্রিজে ব্যাট পৌঁছালেও সোবহানার ব্যাট ছিল শূন্যে। তাকে আউট হয়ে যেতে হয় ২০ বলে ১৫ রান করে। পরের বলে ফাহিমা আক্তার হয়ে যান এলবিডব্লিউ। বাংলাদেশের ভালো সংগ্রহ গড়ার শেষ ভরসা ছিলেন নিগার সুলতানা জ্যোতি। কিন্তু তিনিও বেশিদূর টানতে পারেননি দলকে। ১৯তম ওভারে রাধার বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন জ্যোতি। ৩৬ বলে ২৮ রান করেন টাইগার অধিনায়ক। তার বিদায়ের পর বাকি ৯ বলে আরও তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩ বলে ৭ রান করে অপরাজিত থাকেন রাবেয়া খান। ভারতের পক্ষে ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে দুইটি উইকেট নেন রাধা যাদব। একটি করে উইকেট নিয়েছেন রেনুকা সিং, পূজা ভাস্ত্রেকার ও শ্রেয়াংকা পাতিল।
১১৮ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ৬ ওভারেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত করে দেয় ভারত। প্রথম ৬ ওভারে ৫৯ রান তুলে নেওয়া ভারতের দুই ওপেনার শেষ পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হন ৯১ রানে গিয়ে। ৩৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরন করা শেফালি ভার্মা ফিরেন ৩৮ বলে ৫১ রান করে। ১৩তম ওভারে এসে প্রথম উইকেট পায় বাংলাদেশ। রিতু মণি নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নেন শেফালির। ৯ রান পর বিদায় নেন স্মৃতি মান্ধানাও। হাফ সেঞ্চুরি তোলার আগেই ফিরেন স্মৃতি। ৪২ বলে ৫ টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ রান করে বিদায় নেন তিনি। ততক্ষণে ভারতের জয় নিশ্চিত হয়ে গেছে অনেকটাই। দলটির হয়ে বাকি কাজটুকু সারেন অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌর ও রিচা ঘোষ। ১০ বলে ৬ রান করে হারমানপ্রিত ও ১০ বলে ৮ রান করে অপরাজিত থাকেন রিচা। তার আগে অবশ্য ৯ রান করে ফিরেছেন হেমালতা। বাংলাদেশের পক্ষে একটি করে উইকেট নিয়েছেন নাহিদা আকতার, রাবেয়া খান এবং রিতু মনি।
