বাঁশখালীর উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত এলাকা প্রতিদিন লোকে–লোকারণ্য হয়ে উঠেছে ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায়। সারি সারি ঝাউবন আর সুদীর্ঘ বেড়িবাঁধের উপর এ সমুদ্র সৈকত যে কারো মন কাড়ে। কক্সবাজার, পতেঙ্গা বা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ছাড়াও বাংলাদেশে যে কয়েকটি স্বল্প পরিচিত সমুদ্র সৈকত রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো চট্টগ্রাম জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত।
বালুময় বেলাভূমি এবং ঝাউবনে ঘেরা বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতকে কক্সবাজারের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত বলা হয়ে থাকে। এটি ছনুয়া, গণ্ডামারা, বাহারছড়া, সরল, খানখানাবাদ উপকূল মিলিয়ে সর্বমোট ৩৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। বিগত ঈদের পর থেকে প্রতিদিন শত শত লোকের পদচারণায় মুখর থাকছে এ পর্যটন স্পটটি। বিগত দিনে উপজেলা প্রশাসন ও পর্যটন কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে পর্যটন এলাকা হিসেবে বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়া হলেও কর্মকর্তাদের পরিদর্শন ছাড়া আদতে কোনো কার্যক্রমই গতি পায়নি। দিগন্ত বিস্তৃত সাগরের বুকে সূর্যাস্তের দৃশ্য, লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ বা দলবেঁধে বিচ ফুটবলে মেতে ওঠার আনন্দ ভ্রমণকারীদের দেয় এক অপার্থিব পূর্ণতা ও আনন্দ। সমুদ্র সৈকত এলাকার সমাজকর্মী জাহেদ আকবর জেবু বলেন, দিন দিন উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত সবার কাছে বিনোদন এবং পর্যটন স্পটে রূপ নেওয়াতে এবার ঈদের ছুটিতে প্রচুর লোক সমাগম হয়েছে। খানখানাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, যারা দূরে যেতে চান না তাদের জন্য বাঁশখালীর এ সমুদ্র সৈকত অনন্য।
সমুদ্র সৈকত এলাকাকে ঘিরে গড়ে উঠা ‘বাঁশখালী সমিতি কঙবাজার’ এর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তাজুল ইসলাম চৌধুরী পলাশ জানান, বাঁশখালী উপকূলীয় সমুদ্র সৈকতকে পর্যটনবান্ধব করার জন্য বাঁশখালী সমিতি কঙবাজারের প্রথম উদ্যোগে বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতে ১০টি কিটকট (ছাতাযুক্ত চেয়ার) বসানো হয়েছে। সম্পূর্ণ ফ্রিতে পর্যটকরা ব্যবহার করতে পারছেন। তিনি জানান, কঙবাজারে বসবাসরত সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত ও ব্যবসায়ীসহ সকলকে নিয়ে ৩১ বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটির যাত্রা শুরু হয়েছে ‘বাঁশখালী সমিতি কঙবাজার’। এটি আত্মপ্রকাশের মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতে কিটকট বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। তিনি আরো জানান, এই পর্যটন স্পট ঘিরে আমাদের দ্বিতীয় উদ্যোগ আরও সুন্দর হবে। তবে বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতকে একটি সত্যিকারের পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলতে হলে পর্যটন কর্পোরেশনকে বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।