আসন্ন রোজার ঈদ ও নববর্ষ ঘিরে পাঁচ দিনের ছুটির অবকাশে যাচ্ছে দেশ। ইতোমধ্যে ফাঁকা হতে শুরু করেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। ফাঁকা নগরীর নিরাপত্তায় একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে নগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ–কমিশনার (অপারেশন) মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ছুটির এই সময়ে চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঈদের আগের দিন থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত এক ধরনের এবং নববর্ষ নিয়ে আলাদা নিরাপত্তাভাবে ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। খবর বিডিনিউজের। জাহাঙ্গীর বলেন, এ ছুটিতে থানার নিয়মিত টহল ও ফোর্সের পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও ৪০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যারা ছুটিতে নগরবাসীর নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবেন। অতিরিক্ত উপ–কমিশনার জাহাঙ্গীর বলেন, ছুটিতে আবাসিক এলাকাগুলোতে প্রতিদিন থানার নিয়মিত মোবাইল টিমগুলোর পাশাপাশি এলাকা বুঝে আরও দুটি বা একটি করে অতিরিক্ত মোবাইল টিম টহলে থাকবে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম নগরীতে ১৬৮টি আবাসিক এলাকা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাসিক এলাকা পাঁচলাইশ থানার অধীনে। এছাড়া, কোতোয়ালি থানায় ১৩টি, বাকলিয়ায় পাঁচটি, চকবাজারে আটটি ও সদরঘাট থানার অধীনে আছে চারটি আবাসিক এলাকা। চান্দগাঁও থানা এলাকায় আটটি, খুলশীতে ২০টি, বায়েজিদে ১২, ডবলমুরিংয়ে ১০, হালিশহরে ১৭, পাহাড়তলীতে সাত, আকবর শাহ এলাকায় ১৬, বন্দর থানা এলাকায় তিনটি, ইপিজেড থানায় দুইটি এবং পতেঙ্গা সাতটি ও কর্ণফুলী থানায় তিনটি করে আবাসিক এলাকা রয়েছে।
ঈদের ছুটিতে অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাওয়ায় বাসাবাড়িগুলো ফাঁকা হয়ে যায়। সেগুলোর নিরাপত্তায় সিএমপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাসা বাড়ির দরজায় ‘অধিক নিরাপত্তা সম্পন্ন’ অতিরিক্ত তালার ব্যবহার, ফাঁকা বাসায় নগদ টাকা ও স্বর্নালঙ্কার রেখে না যাওয়া ও ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যেমন– সিসি টিভি ক্যামেরা ও এলার্ম সিস্টেম স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে নির্দেশনায়। এছাড়া আবাসিক এলাকাগুলোতে রাতে অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করা ও নতুন নিয়োগ করা নিরাপত্তাকর্মীদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ছবি সংরক্ষণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবাসিক এলাকাগুলোতে সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির ঘোরাফেরা দেখলে নিকটতম থানায় অবহিত করতে এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটলে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করতে বলা হয়েছে।
আবাসিক এলাকার পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠাগুলোতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা যাতে সতকর্তার সাথে দায়িত্ব পালন করে, সেটির তদারকি করা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকির জন্য একজন কর্মকর্তাকে পালাক্রমে নিযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও ব্যাংকের নিজস্ব সিসি ক্যামেরাগুলো কাজ করছে কিনা সেগুলোর নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভল্টের চারদিকে সিসি ক্যামেরার কভারেজ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে পুলিশের পরামর্শে।