সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে (২২) গুলি করা সেই শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের (৩২) হেফাজত থেকে আরও একটি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড গুলি ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
শিক্ষক রায়হানের বিরুদ্ধে গুলিবিদ্ধ ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যাচেষ্টা মামলা ও পুলিশের পক্ষ থেকে আরেকটি অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আহত তমাল বগুড়া জেলার ধুনট থানার ধানসিঁড়ি নাটাইপাড়া এলাকার আব্দুল্লাহ আল আমিনের ছেলে। সে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। অভিযুক্ত ডা. রায়হান শরীফ সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার বিএ কলেজের প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি ওই মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক। খবর বাংলানিউজের।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুলহাজ উদ্দীন জানান, গত সোমবার বিকেলে তৃতীয় বর্ষের আইটেম পরীক্ষা একাডেমি ভবনের ৪র্থ তলায় ডা. সামাউন নূর শুভর কক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। পরীক্ষা চলাকালীন রায়হান শরীফ হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ছাত্র–ছাত্রীদের অহেতুক বকাবকি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে তমালকে গুলি করেন। গুলিটি তমালের ডান পায়ের উরুর ওপরের অংশে লেগে গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ও ডিবির টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ডা. রায়হান শরীফকে হেফাজতে নেয়। এ সময় শ্রেণিকক্ষের টেবিল থেকে একটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রও একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।
ডিবির ওসি আরও বলেন, অভিযুক্তকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি তার লেদারের ব্যাগের ভেতর থেকে আরও একটি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গুলি, চারটি ম্যাগাজিন, দুইটি বিদেশি কাতানা (ছোরা) ও ১০টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু জব্দ করা হয়। জব্দ হওয়া সবগুলো অস্ত্রই অবৈধ।
গত সোমবার রাত ১২টার দিকে আহত তমালের বাবা আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে ডিবির উপপরিদর্শক আব্দুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে অপর একটি মামলা দায়ের করেছেন। এসব মামলায় রায়হান শরীফকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গতকাল দুপুরে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে নেওয়া হয়েছে।
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. আমিরুল হোসেন বলেন, শ্রেণিকক্ষে ছাত্রকে গুলি করার ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। ইতোমধ্যে তদন্ত টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত শুরু করেছে।